অজয়ই নেতা, ঘোষণা শঙ্করের

শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে ব্রিগেডের প্রস্তুতি সভায় শঙ্কর সিংহই বললেন, ‘‘অজয়ের নেতৃত্ব নিয়ে বিতর্ক তৈরি করবেন না। অজয়কে সামনে রাখুন। নেতা অজয় দে। তাঁকে ফলো করুন। পাশাপাশি, কর্মীদের উদ্দেশ্যে তার বার্তা ‘‘দু’জনের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করুন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৭
Share:

একই মঞ্চে অরিন্দম-অজয়।নিজস্ব চিত্র

বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য বনাম পুরপ্রধান অজয় দে-র মধ্যে ক্ষমতার টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের এবং দলের ভিতরে-বাইরে বহু চর্চিত। সেই অরিন্দমের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক শঙ্কর সিংহ মঙ্গলবার প্রকাশ্য সভায় শান্তিপুরে অরিন্দমের প্রধান প্রতিপক্ষ অজয় জে-র নেতৃত্বকেই মান্যতা দিয়ে গেলেন! বিরোধীরা এতে চমকিত বটেই, খোদ তৃণমূলের অন্দরেও এই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।

Advertisement

অরিন্দমের ঘনিষ্ঠ হওয়ার পাশাপাশি শঙ্কর সিংহের সঙ্গে অজয় দে-র সম্পর্কও খুব মধুর ছিল না। বরং সম্পর্কে দূরত্ব ও শীতলতা ছিল বলেই রাজনৈতিক মহলের খবর। অথচ এ দিন শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে ব্রিগেডের প্রস্তুতি সভায় শঙ্কর সিংহই বললেন, ‘‘অজয়ের নেতৃত্ব নিয়ে বিতর্ক তৈরি করবেন না। অজয়কে সামনে রাখুন। নেতা অজয় দে। তাঁকে ফলো করুন। পাশাপাশি, কর্মীদের উদ্দেশ্যে তার বার্তা ‘‘দু’জনের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করুন।’’

তা হলে হঠাৎ কী এমন ঘটল যাতে প্রকাশ্যে অরিন্দমের বদলে অজয় দে-র নেতৃত্বের পক্ষে কথা বললেন শঙ্কর? ব্যাখ্যা করতে চাননি শঙ্কর। তবে দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ঘটনায় অরিন্দমের উপরে ক্ষুব্ধ হয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। শান্তিপুরের বিষমদ কাণ্ডের পরে ঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে না-যাওয়ার জন্য নেতৃত্বের ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। তার উপরে, অরিন্দমের বিরুদ্ধে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট বণ্টনে দুর্নীতি –সহ একাধিক অভিযোগ করে দলীয় নেতৃত্বের কাছে চিঠি দেন তৃণমূল নেতা কুমারেশ চক্রবর্তী। পরিস্থিতি বিচার করেই এখন আর অরিন্দমের পক্ষে কথা বলতে চাইছেন না শঙ্কর। প্রকাশ্যে সভায় বলেছেন,

Advertisement

‘‘অরিন্দমকে ভাবতে হবে, অজয় অনেক বেশি অভিজ্ঞ, তাঁর অভিভাবকের মত। তার থেকে পরামর্শ নিতে হবে। এতে কোনও অপরাধ নেই। যেটা অজয়ের থেকে পেতে পারি কেন নেব না?’’ এ দিন বারবার তিনি প্রশংসা করেছেন পুরপ্রধান অজয় দে-র অভিজ্ঞতার। বলেছেন, ‘‘ওঁর ত্যাগ, তিতিক্ষাকে অস্বীকার করতে পারি না। রাজনীতিতে আমরা বহু জিনিস দেখেছি, তাঁর থেকে শিখেছি।’’ দীর্ঘদিন বাদে অজয় দে-র কোনও সভায় শঙ্করকে দেখা গেল।

পুরসভা থেকেই একসঙ্গে মিছিলে পা মিলিয়ে সভাস্থলে পৌঁছোন অজয় দে, মন্ত্রী রত্না ঘোষ, জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, শঙ্কর সিংহ। তখনও সভায় পৌঁছোননি অরিন্দম। বেশ কিছু পরে তিনি, কাউন্সিলর বিভাস ঘোষ ও শহর তৃণমূলের সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র সভায় আসেন। মঞ্চে পৌঁছাতে তাঁদের বাধাও দেন কিছু কর্মী। মাইক হাতে কখনও অজয় দে, কখনও গৌরীশঙ্কর দত্ত কর্মীদের কাছে অনুরোধ করতে থাকেন যাতে অরিন্দমদের মঞ্চে আসার পথ ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে অরিন্দম বক্তব্য রাখার সময়েও চিৎকার শুরু করেন কিছু কর্মী। অসন্তুষ্ট অরিন্দম তখন বলেন, ‘‘আপনারা সবাইকে অপমানিত করছেন। মিটিংটা করতে দিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন