কর্মী ফেডারেশন

সম্মেলনেও চুলোচুলি, কড়া বার্তা দিলেন পার্থ

দলের মহাসচিব বলছেন, ‘সম্মেলন অবৈধ’। যাঁদের লক্ষ্য করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এমন তোপ দাগছেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের সম্মেলনের সেই উদ্যোক্তারা আবার দলেরই এক শীর্ষ নেতার শুভেচ্ছা বার্তা দেখাচ্ছেন। সেই নেতা তৃণমূলের সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি মুকুল রায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০৩
Share:

দলের মহাসচিব বলছেন, ‘সম্মেলন অবৈধ’।

Advertisement

যাঁদের লক্ষ্য করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এমন তোপ দাগছেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের সম্মেলনের সেই উদ্যোক্তারা আবার দলেরই এক শীর্ষ নেতার শুভেচ্ছা বার্তা দেখাচ্ছেন।

সেই নেতা তৃণমূলের সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি মুকুল রায়।

Advertisement

‘শুভেচ্ছাবার্তা’ যদি শীর্ষ নেতৃত্বের সিলমোহর হয়, তবে এটাও ঠিক যে, এই বৈধ–অবৈধের সূত্র ধরে শাসক দলের কর্মচারি ফেডারেশেনর আকচাআকচিও আরও একবার সামনে এসে পড়ল। গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা যে কোনও কাজেই আসছে না, তা কখনও দুই নেতা কখনও বা দলের শ্রমিক সংগঠন এমনকী, মন্ত্রীদের পাস্পপারিক কটাক্ষে বার বার বেআব্রু হয়ে যাচ্ছে। এ বার সরকারি কর্মচারিদের মধ্যেও আড়াআড়ি ফাটলে আর আড়াল থাকল না। এই সংগঠনকে কেন্দ্র করে এর আগেও দুই বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং গৌরীশঙ্কর দত্তের গোষ্ঠীর বিবাদ প্রকাশ্যে এসে পার্টির অস্বস্তির কারণ হয়েছে।

রবিবার কৃষ্ণনগরে রবীন্দ্রভবনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে জেলা সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন উজ্জ্বল বিশ্বাসের ঘনিষ্টরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি। তিনি আবার জেলা সংগঠনের জেলা কমিটিও গড়ে দিলেন। এ দিনের সম্মেলনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের গোষ্টীর নেতাদের দেখা যায়নি।

দলের জেলা কমিটির বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে এ দিনই পার্থবাবু এসেছিলেন নবদ্বীপে। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘এই সম্মেলন পুরোপুরি বেসরকারিভাবে করা হয়েছে। দলের কোন অনুমোদন নেই।’’

অন্যদিকে রবিবারের সম্মেলনের উদ্যোক্তারা আবার দেখাচ্ছেন মুকুল রায়ের শুভেচ্ছা বার্তা। মুকুল অবশ্য বলছেন, ‘‘প্রতিদিন প্রচুর শুভেচ্ছা বার্তা আমাকে দিতে হয়। ফেডারেশনের নাম করে আমার কাছে শুভেচ্ছা বার্তা চাওয়া হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে শেষ কথা বলবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কারণ বিষয়টি তিনিই দেখেন।’’ পাশাপাশি পার্থও বলছেন, “আমরা তো অনেক ক্লাবকেই শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাই। তাই বলে কি সেই ক্লাব সরকারি হয়ে গেল?”

গত ২৪ সেপ্টেম্বর এই রবীন্দ্র ভবনেই একই সংগঠনের জেলা কনভেনশন করেছিলেন গৌরীশঙ্কর দত্তর অনুগামীরা। জেলায় ফেডারেশনের আরও একটি গোষ্ঠী রয়েছে। ফেডারেশনের রাজ্যস্তরের নেতা মনোজ চক্রবর্তীর অনুগামীদের একটি গোষ্ঠী রয়েছে। এই গোষ্ঠীটি উজ্জ্বলবাবুর সঙ্গেই ছিল। ফলে সেপ্টেম্বরের সম্মেলনে তাঁদের দেখা যায়নি।

আবার রবিবারের সম্মেলনেও মনোজবাবুর গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের দেখা মেলেনি। উল্টে এই গোষ্ঠীর নেতা বিবেকানন্দ পাণ্ডে সম্মেলনকে অবৈধ বলে লিফলেট বিলি করেছেন। তবে ইদানীং গৌরীশঙ্কর বাবুর অনুগামী অতনু রায়ের সঙ্গে মনোজবাবুর গোষ্ঠীর কিছুটা বনিবনা হয়েছে।

সেপ্টেম্বরের সম্মেলনে গৌরীশঙ্করবাবুর অনুগত অতনু রায়কে জেলা কমিটির আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়। এ দিন পার্থবাবু সেই সম্মেলনকেই সরকারি বলে জানান। তিনি বলেন, “মৃগেন মাইতির এই ধরণের সম্মেলন ডাকার কোনও অধিকারই নেই। এটা সরকারি সম্মেলন নয়। যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা কেন গিয়েছিলেন তা জানতে চাইব।”

রবিবারের কনভেশনের আহ্বায়ক দেবব্রত চট্টোপাধ্যোয় বলেন, “আগে কে বা কারা ফেডারেশনের নাম করে সম্মেলন করেছে শুনেছি। সেই সংগঠনের কোনও স্বীকৃতি নেই।’’ অতনুবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “শুনছি, জনাকয়েক মিলে ফেডারেশনের নামে সম্মেলন করছে। যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের সিংহভাগই তো সরকারি কর্মীই নন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন