জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী খলিলুর রহমান।
জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে দলের মধ্যে একাধিক নাম নিয়ে চর্চা চলেছে মাস খানেক ধরে। তালিকায় কখনও উঠে এসেছে মহম্মদ সোহরাবের নাম, কখনও সুতির বিড়ি মালিক সাজাহান বিশ্বাসের, কখনও বা স্থানীয় বিধায়ক আখরুজ্জামানের। কিন্তু সবাইকে টপকে জঙ্গিপুরে কার্যত ‘বহিরাগত’, শমসেরগঞ্জের বিড়ি মালিক খলিলুর রহমান বাজি মাত করলেন।
কেন তিনি?
ধুলিয়ানের বড় ব্যবসায়ী পরিবার, সাত রকমের ব্যবসা, এলাকায় সমাজসেবী হিসেবেও ইদানিং পরিচিতি পেয়েছেন। এ ভিন্ন অন্য কোনও পরিচয়ে খলিলুরকে শমসেরগঞ্জের মানুষ তেমন চিনতেন না। বিড়ি কারখানা, পেট্রল পাম্প, স্কুল, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি, চা কারখানা— ডাকসাইটে গাড়ি নিয়ে, এক ব্যবসা থেকে অন্যটায় সামাল দিয়ে বেড়ানো মানুষটাকে মাস কয়েক আগে তৃণমূলের মঞ্চে দেখে তাই কিঞ্চিৎ অবাকই হয়েছিলেন অনেকে। যিনি অবাক হননি, তিনি এলাকার ডাকসাইটে তৃণমূল নেতা। শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি সভা শেষে মঞ্চ ছেড়ে যেতেই তিনি মুখ টিপে বলেছিলেন, ‘‘দাদার ঘনিষ্ঠ হয়েছেন যখন টিকিটটাও বাঁধা, মিলিয়ে নেবেন!’’ মিলে যাওয়ার পরে তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘সব সময় রাজনীতি দিয়ে কাজ হয় না দাদা!’’ হিসেবটা বদলে দিয়েছিলেন দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে জঙ্গিপুর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বেসামাল হয়ে উঠলে কখনও পিকনিক, কখনও সবাইকে নিয়ে বৈঠক, প্রয়োজনে শুভেন্দুর কড়া ধমকেও বিবাদ মিটল না তখন থেকেই এমন কোনও মুখের সন্ধান শুরু হয়েছিল, যিনি নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। দলের মহকুমা সভাপতি বিকাশ নন্দের ব্যাখ্যা— ‘‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, সমাজসেবী হিসেবে তাঁকে ঘিরে কোনও বিতর্ক নেই। তাই তাঁকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।’’ দলীয় সূত্রে খবর, ফরাক্কায় দলে যোগ দেওয়ার সময় খলিলুরকে বলা হয়েছিল মালদহ (দক্ষিণ) অথবা জঙ্গিপুর থেকে দাঁড় করানো হবে। সে কথাই রাখা হল মঙ্গলবার।