খাসির মাংস, ভাত নিয়ে আর স্ত্রী-র কাছে ফেরা হল না আসাদুলের!

ইদানীং ভাকুড়ি মোড়ে জাতীয় সড়কের ধারে একটা হোটেল চালাতেন তিনি। ‘‘রাতে ভাত রান্না কোরো না। আমি খাসির মাংস আর ভাত নিয়ে যাচ্ছি’’— দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা বিবিকে ফোনে বলেছিলেন টিএমসিপি-র ব্লক সভাপতি আসাদুল শেখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০১:২৯
Share:

শোকার্ত: মৃত আসাদুলের পরিবারের লোকজন। নিজস্ব চিত্র

ইদানীং ভাকুড়ি মোড়ে জাতীয় সড়কের ধারে একটা হোটেল চালাতেন তিনি।

Advertisement

‘‘রাতে ভাত রান্না কোরো না। আমি খাসির মাংস আর ভাত নিয়ে যাচ্ছি’’— দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা বিবিকে ফোনে বলেছিলেন টিএমসিপি-র ব্লক সভাপতি আসাদুল শেখ। চার বছরের মেয়েকে নিয়ে পঞ্চাননতলা প্রফেসর অ্যাভিনিউয়ে যে ভাড়াবাড়িতে সেলিনা থাকেন, সেখানে তিনি এসেছিলেন হোটেল ম্যানেজার বাবলু শেখের মোটরবাইকে।

স্ত্রী আর মেয়ের সঙ্গে খাওয়া সেরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি যখন মসজিদপাড়ায় নিজের বাড়িতে (‌সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকেন আসাদুলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী হাসিনা বিবি) ফিরছেন, বকুলতলা মোড়ে হামলা হয়।

Advertisement

শুক্রবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে শুয়ে বাবলু বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা ৭-৮ জন ছিল। বকুলতলা মোড়ের গলির কিছুটা অন্ধকার। গল্প করতে করতে আমরা আসছিলাম। হঠাৎই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এক জন বোমা ছোড়ে। সেটা আমার ডান পায়ে লাগে। চোখ ধাঁধিয়ে যায়। তারই মধ্যে বাকিরা থুটে এসে পিছন থেকে টেনে নামিয়ে নেয় আসাদুলকে। দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে আমি বাইক ছুটিয়ে ভাকুড়ি মোড়ে গিয়ে খবর দিই।’’

আসাদুলের দেহ যখন রাস্তা থেকে তোলা হয়, তাঁর থুতনির কাছ থেকে গুলি ঘাড় ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। বাঁ বাহুতে একটি গুলি, আরও তিনটি গুলি তাঁর বুকের বাঁ দিকে।

আরও পড়ুন: আরও এক বার প্রণবকেই রাষ্ট্রপতি হিসাবে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কেন খুন হলেন আসাদুল?

তাঁর পরিবার ও তৃণমূলের দাবি, ডোমকলে ভোটের প্রচার করতে গিয়ে কংগ্রেসের কোপে পড়েছেন তিনি। কিন্তু পাল্টা প্রশ্ন উঠছে, বহু নেতাই তো প্রচারে যাচ্ছেন, শুধু আসাদুলই নিশানা হলেন কেন?

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের একটি সূত্রের খবর, এই খুনের পিছনে যদি বা রাজনীতিও থাকেও, অন্য কারণ থাকাও বিচিত্র নয়। কেননা আসাদুল জমি কেনাবেচা সংক্রান্ত বিষয়ে জড়িত ছিলেন। ধৃত শিলাদিত্য হালদারেরাও ওই এলাকায় জমি কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণ করেন। আসাদুলের হোটেলের পিছনে একটি জমি নিয়েও বিবাদ চলছিল। তা ছাড়া, বছরখানেক আগেও তিনি পাচার হয়ে আসা কয়লা ইটভাটায় জোগানের কারবার করতেন এবং তা নিয়েও এক ভাটা মালিকের সঙ্গে তাঁর বিবাদ বেধেছিল বলে পুলিশের একটি সূত্রের দাবি।

কংগ্রেসের যে তিন জনকে খুনের পরেই ধরা হয়েছিল সেই শিলাদিত্য হালদার, হিরু হালদার ও শ্যামল হাজরাকে খুন ও অস্ত্র নিয়ে হামলার মামলায় এ দিন মুর্শিদাবাদ সিজেএম আদালতে হাজির তোলা হয়। বিচারক পিনাকী মিত্র তাঁদের চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement