সভাপতি পোড় খাওয়া শশাঙ্কই

অনেকেই হয়তো আন্দাজ করতে পারেননি যে হারিয়ে যেতে বসা শশাঙ্ক বিশ্বাসকে আবার ফিরিয়ে আনা হবে ক্ষমতায়।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

হাঁসখালি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৫৯
Share:

মঙ্গলবার রাতে তাঁর হাতে নিয়োগপত্র পৌঁছে গিয়েছে।

সভাপতি পরিবর্তন যে অবধারিত, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। কিন্তু এত বড় চমক যে থাকবে সেটা অনেকেরই মাথায় আসেনি। অনেকেই হয়তো আন্দাজ করতে পারেননি যে হারিয়ে যেতে বসা শশাঙ্ক বিশ্বাসকে আবার ফিরিয়ে আনা হবে ক্ষমতায়।

Advertisement

শঙ্কর সিংহ রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হওয়ার পর থেকে হাঁসখালি ব্লকে শশাঙ্কের গুরুত্ব একটু-একটু করে বাড়ছিল। ব্লক সভাপতি কল্যাণ ঢালিকে সরিয়ে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি উঠছিল দলের ভিতর থেকেই। শেষমেশ মঙ্গলবার রাতে তাঁর হাতে নিয়োগপত্র পৌঁছে গিয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পরে হাঁসখালি ব্লকে তৃণমূলের চরম সাংগঠনিক সঙ্কট তৈরি হয়। লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতাকর্মীরা একের পর এক হামলার অভিযোগ তুললেও ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তুলতে পারেননি। নেতাকর্মীদের একটা বড় অংশ ব্লক সভাপতির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করতে থাকেন। জেলা পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ যায়।

Advertisement

কল্যাণের বিরুদ্ধে নেতৃত্বদানে দুর্বলতা ছাড়াও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ ছিল নেতাকর্মীদের ওই অংশের। ব্লক সভাপতি ছাড়াও তিনি জেলা পরিষদের সদস্য। তাঁর স্ত্রী আবার বগুলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘হাঁসখালিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছিল।” কিন্তু শশাঙ্ক বিশ্বাস কেন? জেলা নেতাদের দাবি, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসা মন্টু ঘোষকে সত্যজিৎ এতটাই কোণঠাসা করে রেখেছিলেন যে তিনি শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন। তাই এক বারের বিধায়ক, হাঁসখালি পঞ্চায়েত সমিতির দু’বারের সভাপতি ও এক বারের কর্মাধ্যক্ষ, ২০০৮ সাল থেকে টানা দু’বার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শশাঙ্ককে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁর স্ত্রীও জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

এক সময়ে গোটা জেলায় দাপুটে নেতা হিসাবে তার পরিচিতি ছিল। ২০০৯ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু এক সময়ে সত্যজিৎ ও দুলাল বিশ্বাসদের তিনি প্রায় ঘরে ঢুকে যান। দুলাল ও সত্যজিৎ খুন হওয়ার পর দল আবার তাঁর প্রয়োজন অনুভব করেছে। তবে দলেরই একাংশের ধন্দ, শশাঙ্ক একে অসুস্থ, তার উপরে এখন বেশির ভাগ দিন কল্যাণীতে থাকেন। তিনি আদৌ পরিশ্রম করতে পারবেন? শশাঙ্ক বলেন, “কে কী বলছেন, জানি না। তবে এই ব্লকটাকে আমি হাতের তালুর মতো চিনি। ঘুরে দাঁড়াবই।” শঙ্কর বলেন, “সত্যজিৎ খুন হওয়ার পরে যে নেতৃত্বের সঙ্কট তৈরি হয়েছিল তা ছেকে বেরোতে শশাঙ্কের মত পোড় খাওয়া নেতার প্রয়োজন। দলের সকলে তাই তাঁকেই বেছে নিয়েছে।” আর কল্যাণ বলেন, “এমন কোনও পরিবর্তনের কথা আমার জানা নেই। নেতৃত্ব কিছু জানাননি। তাই এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন