Prashant Kishor

পিকে-র টিম নিয়ে ক্ষোভ

শিল্পনগরী ফরাক্কায় ২৫ বছর ধরে বিধায়ক হয়ে রয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী মইনুল হক। কখনও সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়ে, কখনও তৃণমূলকে হারিয়ে।

Advertisement

বিমান হাজরা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:৩১
Share:

—ফাইল চিত্র

পিকে-র টিমের মাতব্বরি দলের অনেকের কাছেই অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে ফরাক্কায়। বেড়েছে ক্ষোভ। প্রশ্ন উঠেছে ফরাক্কায় প্রার্থীর মুখ কে?

Advertisement

তৃণমূলের অন্দরেই অভিযোগ উঠেছে, ফরাক্কার রাজনীতিতে অপরিচিত ও অনভিজ্ঞ হাবিব পরভেজকে প্রার্থী করতে চাইছে পিকে-র টিম। আর ফরাক্কার বেশির ভাগ তৃণমূল নেতার দাবি প্রার্থী হোন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আঞ্জুমানআরা খাতুন।
শিল্পনগরী ফরাক্কায় ২৫ বছর ধরে বিধায়ক হয়ে রয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী মইনুল হক। কখনও সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়ে, কখনও তৃণমূলকে হারিয়ে।

অধীর চৌধুরী প্রকাশ্য জনসভায় এ বারও মইনুলকেই প্রার্থী করার কথা ঘোষণা করে গিয়েছেন এক মাস আগেই।
বিজেপির মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন রাজ্য কমিটির সদস্য হেমন্ত ঘোষের নাম। এর আগে ২০১১ সালে ১৯.৬ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন তিনি।

Advertisement

কিন্তু শাসক দল তৃণমূলের মুখ?
ফরাক্কায় মুখ বাছাই কত কঠিন কাজ এক জন ব্লক সভাপতি বাছতে গিয়ে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন তৃণমূলের জেলা ও রাজ্য নেতারা। তাই এক সভাপতির বদলে এখন ১১ জনের কমিটি গড়তে হয়েছে ফরাক্কায় নির্বাচন পরিচালনায়।
এনটিপিসির তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ফরাক্কা ব্যারাজ, সিমেন্ট কারখানা ফরাক্কায় জুগিয়েছে কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান। ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তোলাবাজি, কখনও এনটিপিসির ছাই নিয়ে, কখনওবা ঝাড়খণ্ড থেকে আসা পাথর বোঝাই লরি থেকে। বার বার অভিযোগ উঠেছে এই সব তোলাবাজির সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেরই জড়িত থাকার। বহু রাজনৈতিক নেতাই ফরাক্কায় বকলমে ঠিকাদারির ব্যবসায় জড়িত। নির্বাচনে লড়তে এখানে অর্থ কোনও সমস্যা নয়, সমস্যা স্বচ্ছ মুখের।

নেতার অভাব নেই তৃণমূলে। কিন্তু ঐকমত্য নেই কারও সঙ্গে কারও। আর দলের নেতাদের এই বিভেদ মেটাতেই ফরাক্কায় পাঠানো হয়েছে পিকে-র টিমের এক হিন্দিভাষী সদস্যকে। কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হয়েছে। বরং ক্ষোভ বেড়েছে নেতাদের মধ্যে।
দলের এক নেতার কথায়, পিকে টিমের ওই কর্তা ফরাক্কায় এলেই উঠছেন জিগরিতে এক নেতার বাড়িতে। সেখানে বসেই কাজ কর্ম ও খাওয়া দাওয়া সেরে ফিরে যাচ্ছেন বহরমপুর।
দলের আর এক নেতা বলছেন, "পিকের সঙ্গে মূল যোগাযোগ ব্লকের যুব সভাপতি হাবিব পরভেজের। আর সেটাই হয়েছে সঙ্কটের মূল। পরভেজ নেতা হলেও দলের উপর তেমন কোনও প্রভাব নেই তার। স্বচ্ছ মুখের খোঁজেই ফরাক্কায় সিপিএম থেকে টেনে আনা হয়েছিল অরুণময় দাস ও আব্দুস সালামকে। তাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিতে কো-অর্ডিনেটরের কাছে দাবিও জানানো হয়। কিন্তু তা হয়নি।”

হাবিব অবশ্য বলছেন, ‘‘ফরাক্কায় এমন এক কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই যিনি ২৫ বছর ধরে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। কিন্তু তৃণমূলের শক্তিও কম নয়। এক হয়ে দাঁড়ালে ফরাক্কায় লড়াই দেওয়া কঠিন নয়।’’

সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আব্দুস সালাম মাস ছয় আগে। দু’দু’বার বিধানসভায় লড়ে হেরেছেন। বলছেন, ‘‘তৃণমূলের পক্ষে ফরাক্কায় মানুষ নেই তা নয়। কিন্তু তাদের সংগঠিত করার মত নেতৃত্ব নেই। দরকার বলিষ্ঠ এক নেতার।”
দলের প্রবীণ নেতা সোমেন পাণ্ডের কথা, ‘‘ফরাক্কায় দরকার ছিল কালেকটিভ নেতৃত্ব। সেটা নেই বলেই প্রার্থীর মুখ নিয়ে এই সমস্যা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন