পুর-জমিতে ক্লাব গড়ার নালিশ, কাঠগড়ায় তৃণমূল

বছর দুয়ে‌ক আগে মুর্শিদাবাদ পুরসভা বিঘে দুয়েক জায়গায় জুবিলি পার্ক তৈরি করে। এলাকার লোকজনের সকাল-বিকেলের বিনোদনের স্থান ওই পার্ক। কিন্তু সেই পার্কের অন্দরে ক্লাব বানানোর অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কাউন্সিলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০১:২৩
Share:

সেই ক্লাবঘর। —নিজস্ব চিত্র

বছর দুয়ে‌ক আগে মুর্শিদাবাদ পুরসভা বিঘে দুয়েক জায়গায় জুবিলি পার্ক তৈরি করে। এলাকার লোকজনের সকাল-বিকেলের বিনোদনের স্থান ওই পার্ক। কিন্তু সেই পার্কের অন্দরে ক্লাব বানানোর অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কাউন্সিলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তৃণমূল কাউন্সিলর মে‌হেদি আলম মির্জা ওই ক্লাব বানাচ্ছেন। মুর্শিদাবাদ পুরসভা অবিলম্বে ওই ‘অবৈধ নির্মাণ’ বন্ধের মহকুমাশাসক, লালবাগের এসডিপিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। মুর্শিদাবাদের পুরপ্রধান কংগ্রেসের বিপ্লব চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘প্রশাসন শাসকদলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে সাহস পাচ্ছে না। এ দিকে ওই কাউন্সিলর কার্যত বিনা বাঁধায় ক্লাব বানিয়ে চলেছেন। প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ না করলে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে পুরসভা ওই অবৈধ নির্মাণ রুখবে।’

Advertisement

পুরসভার ৬ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝে বিঘে দুয়েক জমির উপর রয়েছে জুবিলি পার্ক। ২০১৪ সালে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৎকালীন সাংসদ কংগ্রেসের মান্নান হোসেন ওই পার্কের সৌন্দর্যায়নের জন্য তাঁর সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ৬০ লক্ষ টাকা দেন। বর্তমানে মান্নান অবশ্য জেলা তৃণমূলের সভাপতি। তিনি অবশ্য এ ব্যাপারে নিজের দলের কাউন্সিলরের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘‘জুবিলি পার্কের এলাকায় ক্লাব বানানো মেনে নেওয়া যায় না। গোটা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কংগ্রেসের সোনালী সিংহরায় বলেন, ‘‘পুরসভার জায়গা দখল করে স্থায়ী ক্লাব ঘর গড়ে তোলা হচ্ছে। গোটা বিষয়টি আমি পুরপ্রধানকে জানিয়েছি।’’ পুরপ্রধান বিপ্লববাবুর দাবি, ‘‘মেহেদি আলম মির্জার মদতে ওই ক্লাব ঘর নির্মিত হচ্ছে বলে জানতে পেরেই তাঁর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলি। কিন্তু তিনি কোনও ভাবে‌ই ওই নির্মাণ বন্ধ করতে রাজি হচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে হয়েছি।’’

Advertisement

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার ককরে মেহেদি বলেন, ‘‘আমি ২০০৫-২০১০ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের পুরপ্রধান ছিলাম। সেই সময়ে জুবিলি ট্যাঙ্ক পার্কের মধ্যে পুরসভা নিজের উদ্যোগে একটি কমিউনিটি হল গড়ে তোলে। ওই কমিউনিটি হলের জায়গায় ‘জুবিলি ট্যাঙ্ক’ নামে একটি ক্লাব ছিল। তখন ক্লাবের ছেলেরা সেখান থেকে সরে গিয়ে পার্কের পূর্ব দিকে অস্থায়ী ক্লাব ঘর নির্মাণ করে। এখন সেখানেই ইঁট-সিমেন্ট দিয়ে স্থায়ী ক্লাব নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে কোনও অন্যায় নেই।’’ পুরসভার জায়গায় ক্লাব তৈরির মধ্যে কোনও ‘অন্যায়’ দেখছেন না ক্লাবের সভাপতি আহমের ওরাজি। তিনি বলেন, ‘‘বহু বছরের পুরনো এই ক্লাব। পুরসভার কমিউনিটি হল তৈরির জন্য আমরা জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলাম। এখন ওই ক্লাব ঘর তৈরি করছি। এতে অন্যায়টা কোথায়?’’ তবে পুরসভার দাবি, কমিউনিটি হল তৈরি হয়েছে পুরসভার জায়গাতেই। বরং ওই জায়গাতেও অবৈধ ভাবেই ক্লাব তৈরি হয়েছিল। লালবাগের মহকুমাশাসক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিজেদের জমিতে ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে পুরসভাকেই উদ্যোগী হতে হবে। তবে পুরসভা প্রশাসনের সাহায্য চাইলে তা দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন