প্রতীকী ছবি।
নদিয়া জেলায় প্রাথমিক স্কুলের ক্ষেত্রে বাড়তে চলেছে সার্কেল বা চক্রের সংখ্যা। জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলির উপরে নজরদারি আরও বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত বলে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে। এর ফলে স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সুবিধার পাশাপাশি শিক্ষকদেরও অনেক সুবিধা হবে বলে মনে করছেন কর্তারা।
বর্তমানে এই জেলায় চক্রের সংখ্যা ৩৭। সেটা বেড়ে হবে ৫৩। সেই মতো রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে নতুন ১৬টি চক্রের নাম প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে। সেখানে করিমপুর ব্লকের তিনটি চক্র ভেঙে চারটি করা হয়েছে। তেহট্টের তিনটি চক্র ভেঙে করা হয়েছে পাঁচটি। চাপড়ার দু’টি চক্র ভেঙে তিনটি, কালীগঞ্জের দু’টি চক্র ভেঙে চারটি, নাকাশিপাড়ার দু’টি চক্র ভেঙে চারটি, ধুবুলিয়ার একটি চক্র ভেঙে দু’টি করা হয়েছে। শান্তিপুরে দু’টি ভেঙে তিনটি, বীরনগরে একটি ভেঙে দু’টি, রানাঘাট-২ ব্লকে দু’টি চক্র ভেঙে তিনটি করা হয়েছে। হাঁসখালিতে দু’টি ভেঙে তিনটি ও কৃষ্ণগঞ্জে একটি ভেঙে দু’টি, চাকদহে দু’টি ভেঙে তিনটি ও কল্যাণীর দু’টি চক্র ভেঙে তিনটি করা হয়েছে।
গত ২৬ ডিসেম্বর এই তালিকাটি প্রস্তাব আকারে শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ রায় বলছেন, “প্রতিটি চক্র পঞ্চাশটি করে স্কুল রাখতে বলা হয়েছে। সেই মতো সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই আমরা নতুন চক্রের প্রস্তাব করেছি। আরও ১৬টি নতুন চক্র তৈরি হলে স্কুলগুলির উপরে নজরদারি আরও বেশি করে বাড়ানো সম্ভব হবে।”
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কর্তাদের দাবি, বর্তমানে এমন বেশ কয়েকটি চক্র আছে যেখানে একশোটির বেশি স্কুল রয়েছে। ফলে এক জন সার্কেল ইনস্পেক্টরের (চক্র পরিদর্শক) পক্ষে এতগুলি স্কুলের উপরে নজরদারি করা সম্ভব হয় না। সেই সব বড়-বড় চক্র ভেঙে ছোট করা হলে এক-একটিতে স্কুলের সংখ্যা অনেক কমে যাবে। তাতে ইনস্পেক্টরদের পক্ষে নজরদারি সহজ হবে এবং গোটা প্রক্রিয়া আগের চেয়ে কার্যকর হবে বলে তাঁদের ধারণা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই চক্রের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। নদিয়া জেলায় প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ২,৬৪৮। প্রতিটি চক্রের জন্য ধরা হয়েছে ৫০টি করে স্কুল। সেই মতো এই জেলার জন্য আরও ১৬টি চক্র বরাদ্দ করা হয়েছে। নভেম্বরের শেষের দিকে শিক্ষা দফতর থেকে ১৬টি নতুন চক্র চিহ্নিত করার জন্য নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, একটি চক্রকে একটিই ব্লকের মধ্যে থাকতে হবে, অর্থাৎ একটি চক্র যেন দু’টি ব্লকে ভাগ না হয়ে থাকে। পাশাপাশি, একটা গ্রাম পঞ্চায়েতের সব ক’টি স্কুলও যেন একই চক্রের মধ্যে থাকে। সেই নির্দেশ মেনেই চক্রগুলির বিন্যাস হয়েছে।
কত নতুন চক্র হবে, তা নির্ধারণ করতে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শককে নিয়ে তিন জনের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি নদিয়া জেলার সমস্ত চক্র পরিদর্শক ও অবর পরিদর্শকদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের মতামত নেয়। তারই ভিত্তিতে নতুন ১৬টি চক্র নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেই তালিকা এখন শুধু অনুমোদনের অপেক্ষায়।