অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে। নওদায়। নিজস্ব চিত্র
বাঁশ ও টালির তৈরি ঘরে রান্না হচ্ছিল সাত্তার শেখের বাড়িতে। উনুনের পাশেই ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। সামান্য সতর্ক থাকার প্রয়োজনটুকু বোধ করেননি কেউ। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছিল। সিলিন্ডার ফেটে ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন দু’জন।
তবে আগুনে নয়। আগুন নেভানোর জন্য জল ঢালতেই সশব্দে বিস্ফোরণ হয় সিলিন্ডারের আর তার জেরেই ছিন্নভিন্ন হয়ে য়ায় উদ্ধার করেত ছুটে আসা দু’জন।
রান্নাঘরের ভিতর থেকে তখন কান্না আর গোঙানির শব্দ। কিন্তু ধোঁয়া আর আগুন ঠেলে ভিতরে ঢোকার সাহস করছিলেন না কেউ। শুরু হয় জল ঢালা। নিমেষে বিস্ফোরণ। আর তার জেরেই মারা গিয়েছেন নূর ইসলাম (৩৮)। আলাউদ্দিন শেখ (৫৪)। তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও অন্তত তিন জন মহিলা। তাঁদের আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ফাল্গুলের হাওয়া ছিল জোড়ালো। নওদার ১৫ মাইল ও রঘুনাথপুর লাগোয়া এলাকায় সাত্তার শেখের বাড়িতে রান্না হচ্ছিল। সেই কাঠের রান্নার আগুন থেকে ঘরে আগুন ধরে যায়। পাশের পাটকাঠির দেওয়াল ও টালির ছাউনি থাকায় আগুন সারা ঘরে ছড়িয়ে পরে। সেই আগুন দেখে চিৎকার শুরু করে বাড়ির লোকজন। আওয়াজ শুনে ছুটে আসে পড়শিরা। প্রথমে সকলে মিলে বালতির জল নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ক্রমশ আগুন ধরে যায়।
সেই সময় আগুন নেভাতে এসেছিলেন প্রতিবেশি পেশায় রাজমিস্ত্রী নূর ইসলাম ও ট্রাক্টর চালক আলাউদ্দিন শেখ। কিন্তু রান্না ঘরের অপর প্রান্তে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার হঠাৎ ফেটে যায়। এবং ফাটা সিলিন্ডার প্রায় চল্লিশ ফুট ছুটে এসে প্রথমে নূর ইসলামের গলায় ও মাথায় লাগে। ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। মাথায়, পেটে গুরুতর জখম অবস্থায় আলাউদ্দিন কে প্রথমে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল ও সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছিল। রাস্তাতে মারা যান তিনি। জখম হয় সাত্তার শেখের বাড়ির দুই মহিলা রাকিবা বেওয়া ও নার্গিস বিবি।
প্রত্যক্ষদর্শী মহিদ খামারু বলেন, ‘‘আগুন হুহু করে ধরে যায়। যখন সামলাতে পারলাম না তখন ঘরের অনেকদূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমাদের পাশেই ছিলেন আলাউদ্দিন আর নূর ইসলাম। সিলিন্ডার ফেটে যে এমন কাণ্ড ঘটবে বুঝতেই পারিনি। চোখের সামনে জলজ্যান্ত দুটো লোক ছটফট করে মারা গেল।’’