প্রতীকী ছবি।
এক জন অষ্টম শ্রেণি পাশ, অন্য জন ষষ্ঠ শ্রেণি। দু’জনেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে চেম্বার খুলে বসেছিল। দালাল মারফত বাসস্ট্যান্ড কিংবা স্টেশন থেকে রোগীদের ভুল বুঝিয়ে এনে চিকিৎসা-ব্যবসাও ফেঁদেছিল ফলাও করে। অভিযোগ পাওয়ার পরে, পুলিশ ওই দুই ভুয়ো চিকিৎসক-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার বহরমপুরের গোরাবাজার নিমতলার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা বহরমপুরের নগড়াজোল এলাকার বাসিন্দা নাজিম আলি শেখ, এবং লবাগের আয়েশবাগ এলাকার বাসিন্দা সৌগতা দাসদত্ত, বহরমপুরের জমিদারি এলাকার বাসিন্দা নিলামবক্স মোল্লা ও হরিদাসমাটি এলাকার টোটো চালক রবি হালদার।
পুলিশের দাবি, অষ্টম শ্রেণি পাশ নাজিম এবং ষষ্ঠ শ্রেণি পাশ সৌগতা নিজেদের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা করছিল। নিলাম বক্স সৌগতার কম্পাউন্ডারের কাজ করছিল। আর রবি ছিল দালালের ভূমিকায়, লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে তাদের কাছে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসত সে।
বৃহস্পতিবার ধৃতদের বহরমপুরে সিজেএমের এজলাসে তোলা হলে বিচারক তাদের সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। বহরমপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, দু’জন চিকিৎসক নয়, অথচ তারা চেম্বার খুলে বসে চিকিৎসার নামে লোক ঠকাচ্ছিল। এ ছাড়া এক জন কম্পাউন্ডার ছিল এবং টোটো চালক তাদের জন্য রোগী ধরে আনত। সৌগতা প্রায় মাস তিনেক ধরে ভাড়া বাড়িতে চেম্বার খুলে চিকিৎসা করছিল। তার চেম্বারের পাশেই মাস খানেক ধরে নিজামও চেম্বার খুলে বসেছিল। চেম্বার দু’টিও বুধবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার শমসেরগঞ্জের রতনপুরের বাসিন্দা আনিকুল শেখের স্ত্রী আলময়ারা বিবির মাথা ব্যথার চিকিৎসার জন্য বহরমপুরে এক চিকিৎসকের কাছে আসছিলেন। বহরমপুর বাস টার্মিনাসে নামতেই আনিকুলকে ভুল বুঝিয়ে টোটো চালক রবি হালদার তাঁদের সৌগতার চেম্বারে নিয়ে যায়। আনিকুলের স্ত্রীর চিকিৎসা করে দেড় হাজার টাকাও আদায় করে। কিন্তু তাঁদের সন্দেহ হয়, ঘটনাটি তাঁরা থানায় জানান।
এর পরেই হানা দেয় পুলিশ। এ দিন আনিকুল বলেন, ‘‘স্ত্রীর মাথায় যন্ত্রণা করে রোজ। তাই বহরমপুরের চিকিৎসকের কাছে দেখাতে এসেছিলাম। কিন্ত ওই টোটো চালক আমাদের বুঝিয়ে মহিলা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। জাপানি ওষুধ দিয়েছে বলে আমার কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করেছিল মহিলা। আমি পুরো বিষয় বহরমপুর থানায় লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’