রাজ্য হ্যান্ডবল দলে ঢুকল সুতির দুই ছাত্রী

অন্নপূর্ণা ঘোষ ও পায়েল দাস আহিরণ হেমাঙ্গিনী হাইস্কুলের ছাত্রী। অন্নপূর্ণা  দ্বাদশ শ্রেণিতে এবং পায়েল একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। দুই পরিবারেরই কেউই সেভাবে খেলাধুলায় অংশ নেয়নি।

Advertisement

বিমান হাজরা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫০
Share:

অনুশীলন: ঘাম ঝরানো। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির কেউ দূরের কথা বছর চারেক আগে গেরামের লোকেরাও জানতেন না হ্যান্ডবল খেলা কাকে বলে। অথচ এ বছর সুতির আহিরণের দুই মেয়ে বাংলার হয়ে জাতীয় হ্যান্ডবল প্রতিযোগীতায় খেলবে। আহিরণের দুই মেয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে বলে আবাসিক শিবিরও হচ্ছে আহিরণেই। বছর দুয়েক আগে আহিরণের ওই স্কুলেরই দুই ছেলে বাংলা দলে সুযোগ পেয়েছিল। এ বার মেয়েদের এই সাফল্যে খুশি গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

অন্নপূর্ণা ঘোষ ও পায়েল দাস আহিরণ হেমাঙ্গিনী হাইস্কুলের ছাত্রী। অন্নপূর্ণা দ্বাদশ শ্রেণিতে এবং পায়েল একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। দুই পরিবারেরই কেউই সেভাবে খেলাধুলায় অংশ নেয়নি। স্বভাবতই স্কুলের দুই ছাত্রীর এই কৃতিত্বে খুশি স্কুলের ছাত্র থেকে শিক্ষক সকলেই।

অন্নপূর্ণারা চার ভাই বোন। বাবা পেশায় কৃষিজীবী। মেয়ে বাংলার হয়ে হ্যান্ডবলে খেলবে শুনে খুশি চেপে রাখতে পারেন নি মা পলি ঘোষ। বলছেন, “মেয়ের জন্য গর্ব হচ্ছে। আজ লক্ষ্মী পুজো। মায়ের কাছে কামনা করেছি, মেয়েরা যেন জিতে ফেরে।”

Advertisement

পায়েলের বাবা ট্রেনে জিনিসপত্র ফেরি করেন। তিনি বলেন “মেয়ের এই সাফল্যে গোটা গ্রাম খুশি হয়েছে। এটাই আমাদের কাছে অনেক।”

১ অক্টোবর থেকে বাংলা দলের ২০ জন কিশোরীকে নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে আহিরনে। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন রাজ্যের দুই কোচ সুবীর রায় ও শ্রীকান্ত মন্ডল।

সুবীরবাবু জানান, সব জেলা থেকে ৫০ জন মেয়েকে প্রাথমিক শিবিরে ডাকা হয় পুরুলিয়ায়। সেখানে ২০ জনকে বেছে নেওয়া হয়। আহিরনে বেছে নেওয়া হয়েছে চূড়ান্ত ১৬ জনকে। সেই দলেই সুযোগ পেয়েছে অন্নপূর্ণা ও পায়েল।

মুর্শিদাবাদ জেলা হ্যান্ডবল কমিটির সম্পাদক স্নেহাশিস ঘোষ জানান, ১০ থেকে ১৫ অক্টোবর কর্ণাটকে জাতীয় হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ১৬ জনের এই দল ৭ অক্টোবর হাওড়া স্টেশন থেকে রওনা দেবে। আহিরণ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন ঘোষ বলেন, “গত বছর ছেলেদের বাংলা হ্যান্ডবল দলেও দুই ছাত্র সুযোগ পেয়ে ইনদওরে গিয়েছিল। এ বারে দুই ছাত্রী সুযোগ পেয়েছে। এরা সকলেই সাধারণ কৃষিজীবী পরিবারের।

এর পিছনে কৃতিত্ব অবশ্য এই স্কুলে শরীর শিক্ষার শিক্ষকের। তিনি ভাল হ্যান্ডবল খেলতেন। চার বছর আগে তিনি এই স্কুলে যোগ দেওয়ার পরে তিনিই পড়ুয়াদের উৎসাহ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন