প্রহৃত পুরকর্মী, অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতা

পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে দু’পক্ষকে শান্ত করতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান উপ-পুরপ্রধান। তিনি কিছু বুঝে উঠার আগেই রাসমত ও জাহাঙ্গির আজাদকে চড়-থাপ্পড় ও ঘুসি মারেন। ঘরের মেঝেয় ফেলে তাঁকে একাধিকবার লাথি মারা হয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কান্দি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫৫
Share:

অশান্তি পুরভবনে: কান্দিতে। নিজস্ব চিত্র

পুরভবনে উপ-পুরপ্রধানের সামনেই পুরসভার এক অস্থায়ী কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি এবং তাঁর এক অনুগামীর বিরুদ্ধে। বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ কান্দি পুরসভায় এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগের তির পুরসভার ওয়ার্ড কমিটি সম্পাদক তথা যুব তৃণমূল নেতা রাসমত শেখ এবং তাঁর অনুগামী, কান্দি শহর যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির শেখের বিরুদ্ধে। ঘটনায় জখম পুরকর্মী আজাদ শেখের কান্দি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

Advertisement

এ দিন সকালে কর্মীদের অধিকাংশই তখন পুরসভায় উপস্থিত। নিজের ঘরে সবেমাত্র গিয়ে বসেছেন উপ-পুরপ্রধান অজয় বড়াল। তাঁর ঘরে তখন পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক রাসমত শেখ বসে রয়েছেন। তিনি আবার ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামিউন খাতুনের আত্মীয়। রাসমতের সঙ্গে ছিলেন জাহাঙ্গিরও। অজয়বাবুর কাছে তাঁরা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তাঘাটের উন্নতি হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। ওই ওয়ার্ডের নিকাশি নালাগুলি কেন ঢেকে দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নও তাঁরা তোলেন। এরই মধ্যে পুরসভার অস্থায়ী কর্মী আজাদ অজয়বাবুর ঘরে ঢোকেন। অভিযোগ, আজাদকে ঘরে ঢুকতে দেখে রাসমত এবং জাহাঙ্গির তাঁকে গালিগালাজ করেন। পাল্টা কিছু বলেন আজাদও। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে দু’পক্ষকে শান্ত করতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান উপ-পুরপ্রধান। তিনি কিছু বুঝে উঠার আগেই রাসমত ও জাহাঙ্গির আজাদকে চড়-থাপ্পড় ও ঘুসি মারেন। ঘরের মেঝেয় ফেলে তাঁকে একাধিকবার লাথি মারা হয় বলেও অভিযোগ।

চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন পুরসভার অন্য কর্মীরা। আহত অবস্থায় আজাদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আজাদ বলেন, “আমি নিজস্ব কাজে উপ-পুরপ্রধানের ঘরে গিয়েছিলাম। সেই সময় রাসমত শেখ ও জাহাঙ্গির শেখ আমাকে বেধড়ক মারধর করেন।”

Advertisement

কান্দির বিধায়ক তথা পুরপ্রধান অপূর্ব সরকারের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত আজাদ। এদিনের ঘটনা তাই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল বলে ধারণা স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের। তাঁরা বলছেন, রাসমতের সঙ্গে পুরপ্রধানের ‘বিবাদ’ দীর্ঘদিনের। তবে রাসমতের প্রতিক্রিয়া, “পুরপ্রধানের সঙ্গে আমার ঝামেলা নেই। আজাদকে আমরা কেউ-ই মারধর করিনি।’’

এদিকে, এই ঘটনার পর পুরকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা স্মারকলিপিও জমা দেন। পুরসভার কর্মী সংগঠনের সম্পাদক সুভাষ মণ্ডল বলেন, “উপ-পুরপ্রধানের সামনে দফতরের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’’ অজয়বাবু বলেন, “আমার ঘরেই একজন পুরকর্মী মার খেলেন। গোটা ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন