অসুস্থতার কারণে পরপর দু’দিন সজল ঘোষ হত্যা মামলার সাক্ষ্যদানে গরহাজির থাকলেন মামলার তদন্তকারী অফিসার বিভাস সেন। বৃহস্পতিবার নবদ্বীপের অতিরিক্ত এবং সেশন জজ সুধীর কুমারের আদালতে সজল ঘোষ হত্যা মামলার শুনানি ছিল। সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল মামলার তদন্তকারী অফিসার বিভাস সেন ও তৎকালীন নবদ্বীপ থানার আইসি শঙ্কর রায় চৌধুরীর। তবে দু’জনের কেউই হাজির ছিলেন না।
মামলার তদন্তকারী অফিসার বিভাস সেনকে এর আগে প্রথম দফায় পরপর চারদিন জেরা করা হয়। দ্বিতীয় দফায় গত ২১ অগস্ট সরকারি আইনজীবীর তরফে আদালতে ডাকা হয়। তবে অসুস্থ থাকায় সে দিনও সাক্ষ্য দিতে আসেননি তিনি। বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতেই সরকারপক্ষের আইনজীবী তথা নদিয়ার অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি বিকাশকুমার মুখোপাধ্যায় আদালতে একটি আবেদন জানান। তাতে বলা হয়, অভিযুক্তদের আবেদনে ওই মামলার শুনানি চলাকালীন গত ২৪ জুলাই আদালতে ধুবুলিয়া থানার দুটি জিডি (জিডি নম্বর ৩৭১/ তারিখ ০৯-০১-১২ এবং জিডি নম্বর ৩৮৫/ তারিখ ১০-০১-১২) পেশ করা হয়েছিল। জিডি দুটি আদালতে এনেছিলেন ধুবুলিয়া থানার কনস্টেবল শঙ্কর দত্ত। যিনি ওই জিডিগুলির লেখক নন এবং সেগুলি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। মামলার প্রয়োজনে ওই জিডি দুটির লেখককে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি চান তাঁরা। বিকাশবাবু বলেন, “ওই দুটি জিডির মধ্যে ৩৭১ নম্বর জিডিতে উল্লিখিত সময় নিয়ে কিছু জিজ্ঞাস্য আছে। কিন্তু ১৩৯ এভিডেন্স অ্যাক্ট অনুযায়ী এ সব বিষয়ে তাঁকেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হয়, যিনি জিডি লিখেছেন। তাই আদালতের কাছে আমরা এমন আবেদন করেছি।”
মামলার অন্যতম অভিযুক্ত পারুলিয়ার কুলকামিনী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা সিপিএমের পূর্বস্থলী জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রদীপ সাহার আইনজীবী প্রতিম সিংহ রায় এবং বিষ্ণুপ্রসাদ শীল অবশ্য ওই আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন। প্রতিমবাবু বলেন, “মামলার শেষ পর্বে এমন আবেদন অর্থহীন। এগুলি মামলাটিকে বিলম্ব করানোর কৌশল ছাড়া কিছুই নয়।” তাঁর দাবি, ওই জিডির লেখককে ডেকে জেরা করার যথেষ্ট সময় ওঁরা পেয়েছিলেন। আদালতের কাছে ওই আবেদন না মানারও আর্জি জানান তাঁরা।
দু’পক্ষের মতামত শোনার পরে বিচারক ওই আবেদন খারিজ করে দেন। সরকারি কৌঁসুলি বিকাশকুমার মুখোপাধায়ের তরফে অবশ্য দ্বিতীয় একটি আবেদন করে হাইকোর্টে বিষয়টি নিয়ে যাওয়ার আবেদন করা হয়। এবং হাইকোর্টে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই আদালতে মামলাটি স্থগিত রাখার কথাও বলা হয়। বিচারক এই আবেদনটিও খারিজ করে দেন। আগামী শুনানির দিন ঠিক হয়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর। বিচারক জানান, এই দুই সাক্ষী সে দিনও গরহাজির থাকলে আদালত কঠোর ব্যবস্থা নেবে।