উল্টোরথে মজে বেলডাঙা

ধীরে ধীরে ফিঁকে হতে হতে সোজা রথের উৎসবটা যে কবে হারিয়ে গেল তা এখনও বুঝে উঠতে পারেন না বেলডাঙার বাসিন্দারা। আসলে আর তা বুঝতেও চান না তাঁরা। কারণ, উল্টোরথের আড়ং আর সোজা রথের কথা মনে পড়তে দেয় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০২:০০
Share:

বেলডাঙায়। নিজস্ব চিত্র

সোজা পথ ছেড়ে বেলডাঙা এখন উল্টো পথে। বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে এমনটা।

Advertisement

না, অন্য কোনও বিষয় নয়। কথা হচ্ছে রথের। এক সময় রথযাত্রা ছিল বেলডাঙার অন্যতম উৎসব। আর পাঁচটা এলাকার মতো এখানে একটি রথকে কেন্দ্র করে উৎসব নয়। দীর্ঘদিন ধরেই বেলডাঙায় রথযাত্রা বারোয়ারি। নয় নয় করে অন্তত কুড়িটি ক্লাব
মাতে রথযাত্রায়।

ধীরে ধীরে ফিঁকে হতে হতে সোজা রথের উৎসবটা যে কবে হারিয়ে গেল তা এখনও বুঝে উঠতে পারেন না বেলডাঙার বাসিন্দারা। আসলে আর তা বুঝতেও চান না তাঁরা। কারণ, উল্টোরথের আড়ং আর সোজা রথের কথা মনে পড়তে দেয় না।

Advertisement

তবে উদ্যোক্তারা বলছেন, এখানে বেশিরভাগ রথ ফুলের। এই মাগ্গিগন্ডার বাজারে দু’বার ফুলের রথ রাস্তায় নামানো বেজায় খরচ সাপেক্ষ। অতএব খরচ ছাঁটতে বাদ সোজা রথ। গত বারো-চোদ্দ বছর ধরে উল্টোরথে মাতোয়ারা হয় বেলডাঙা।

তবে শুরুটা এমন ছিল না। প্রবীন শিক্ষিকা উর্মিমালা মণ্ডল বলছেন, ১০-১২ বছর আগে সোজা রথ জাঁকজমক করেই হত। তার পরে সবই কেমন যেন হারিয়ে গেল।

আশপাশের এলাকায় সোজা রথে আড়ম্বর বেশি। ফলে উল্টোরথে কার্যত ভিড় আছড়ে পড়ে বেলডাঙায়। আজ, সোমবার, বড় ও মাঝারি মিলে প্রায় কুড়িটি রথ পথে নামবে। সঙ্গে অসংখ্য ছোট রথ। বড় রথের বাজেট ৩০-৪০ হাজার। আগে ন’টি চূড়ার রথই ছিল বেলডাঙার ঐতিহ্য। এখন অবশ্য এক চূড়ার রথই বেশি। হাতে গোনা কয়েকটি রথ অবশ্য ন’চূড়াই করে।

প্রচলিত বাঁশ, কাপড়, কাগজের বদলে এখানে বাঁশের কাঠামোতে রঙবেরঙের ফুল, বাহারি আলো দিয়ে রথ সাজানো হয়। রথ তৈরি করে ক্লাবের সদস্যরাই। রথের সঙ্গে থাকে কীর্তনের দল। তবে সময়ের চাহিদা মেনে অনেকেই তাসা, ব্যান্ড, ডিজে বক্সও রাখছেন। উল্টোরথের মেলাও এলাকার বাসিন্দাদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। বেলডাঙা মণ্ডপতলার অন্যতম রথের উদ্যোক্তা অর্নব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন খরচ এত বেড়ে গিয়েছে যে, সাত দিনের ব্যবধানে এত খরচ সাপেক্ষ রথ দু’বার তৈরি করা সম্ভব হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন