নদিয়ার বেশ কিছু এলাকায় গরুর ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ রোগ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণী সম্পদ দফতর। একে চলতি কথায় এঁষো বা ক্ষুরাই রোগ বলে।
চাকদহ, কৃষ্ণনগর-২ এবং হরিণঘাটা ব্লকে বেশ কিছু গরু এই রোগের শিকার। তাদের চিকিৎসা চলছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র সৈকত রানা জানাচ্ছেন, তাঁরা প্রতি সপ্তাহে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে বিনা পয়সায় পশু-পাখির চিকিৎসা করেন। ইদানিং ওই শিবিরগুলিতে দেখা যাচ্ছে, বহু মানুষ ক্ষুরাই-আক্রান্ত পশু নিয়ে আসছেন। দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, বিষয়টি তো সত্যিই সিরিয়াস পর্যায়ে চলে গিয়েছে। নবদ্বীপ-সহ বেশ কয়েকটি ব্লক পোস্টার ছাপিয়ে এ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। আজ, মঙ্গলবার থেকে জেলার সব ব্লকেই টিকাকরণ অভিযান শুরু হয়েছে। দিন কয়েক আগে দফতরের এক যুগ্ম-অধিকর্তা এ ব্যাপারে নদিয়া সহ সব জেলার উপ-অধিকর্তাদের চিঠি পাঠিয়ে সতর্কও করেছেন।
জেলা প্রাণী সম্পদ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ১৮টি ব্লক তো বটেই এমনকি কয়েকটি পুর এলাকার বেশ কিছু লোকজন গো-পালনের উপর নির্ভর করে সংসার চালান। প্রশ্ন উঠছে, টিকাকরণ অভিযানের পরও কেন রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না? একাধিক কর্তা জানিয়েছেন, টিকা ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হয়নি। জেলায় প্রশিক্ষিত ‘লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট’-এর অভাব রয়েছে।
ভাইরাস-ঘটিত এই রোগে আক্রান্ত প্রাণীর প্রথমে জ্বর হয়। পরে প্রাণীর মুখ, জিভ ও পায়ে ঘা হয়। এই অবস্থায় সে খেতে পারে না। ক্ষুরের খোল খুলে পড়ে। গর্ভবতী গাভীর গর্ভপাত হয়ে যায়। দুধ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। আর বলদ অক্ষম হয়ে পড়ে। গরু রোগাক্রান্ত হওয়া মানে জেলার অনেক পরিবারের পথে বসে যাওয়া।
নদিয়া জেলার উপ অধিকর্তা মিলনকুমার সরকার বলেন, ‘‘জেলার কিছু কিছু জায়গায় ক্ষুরাই রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। অধিকর্তার কার্যালয়ের নির্দেশ মতো তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।’’