ইদ কয়েক মাস এগিয়ে আসাতেই চাঙ্গা বর্ষার ভিজে বাজার

রমজানের হাটে ওড়নার ঝিলিমিলি

সমুদ্রগড়ের কাছে তুলসিডাঙার আজিরন বিবি গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে মেয়েদের সস্তার পোশাক বিক্রি করেন। ইদের মরসুমে বারো মাসের খরিদ্দরের চাহিদা সামলাতে এই গরমে নাজেহাল হয়েও ছুটে এসেছেন নবদ্বীপের সাপ্তাহিক হাটে। তিনি একা নন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ১৩:১৫
Share:

দরদাম: নবদ্বীপে। নিজস্ব চিত্র

সোনালি জরির পাড় দেওয়া কালো রেশমের ফিনফিনে জমি, দুই প্রান্ত থেকে ঝুলছে ছোট ছোট ঝুমকো। এমনই একটা ওড়নার নমুনা হাতে করে রোদে পোড়া হাট চত্বরে ঘুরছিলেন আজিরন বিবি। ঠিক ওই রকম ডিজাইনের দুই ডজন ওড়না তাঁর চাই-ই। দাম যা লাগে অসুবিধা নেই। ঠা-ঠা রোদে ঘণ্টা দেড়েক ধরে একাধিক পাইকারি দোকানে হাতড়ে পছন্দসই ওড়নার সন্ধানে ঘেমেনেয়ে একাকার মধ্যবয়সী আজিরন বিবি।

Advertisement

সমুদ্রগড়ের কাছে তুলসিডাঙার আজিরন বিবি গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে মেয়েদের সস্তার পোশাক বিক্রি করেন। ইদের মরসুমে বারো মাসের খরিদ্দরের চাহিদা সামলাতে এই গরমে নাজেহাল হয়েও ছুটে এসেছেন নবদ্বীপের সাপ্তাহিক হাটে। তিনি একা নন। কালনা থেকে কাঁদড়া, তেহট্ট থেকে তপন, এমন হাজারো খুচরো পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে ‘অসময়ে’ জমে উঠেছে নবদ্বীপের সাপ্তাহিক হাট।

সাধারণ হিসাবে এ সময়ে তুমুল বাণিজ্য হওয়ার কথা নয়। অন্যান্য বছর জামাইষষ্ঠীর পর থেকেই বাজারে মন্দা শুরু হয়। একে সামনে ভরা বর্ষা। সেই সঙ্গে বানবন্যা হলে তো কথাই নেই। বাজার জমতে জমতে সেই পুজো। কিন্তু সব হিসাব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে ইদ এগিয়ে আসায়।

Advertisement

পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর কিংবা বহরমপুরের মতো ব্যবসা কেন্দ্রগুলি। বৃহস্পতিবার সারাদিন ও শুক্রবার একবেলার নবদ্বীপের সাপ্তাহিক হাটে ইদের মুখে তাঁতের কাপড় ছাড়াও বিপুল পরিমাণে রেডিমেড জিনিসের চাহিদা। চুড়িদার, ফ্রক, নাইটি, কুর্তি, টপ, লেগিন্স থেকে কাপড়, ব্লাউজ, ওড়না। অন্যদিকে লুঙ্গি, গেঞ্জি, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, পাজামা, রুমালের বিকিকিনি এখন তুঙ্গে।

অসময়ে পাওয়া ইদের মরশুমে সরগরম হাটচত্বরে ব্লাউজের পাইকারি বিক্রেতা বাবুলাল সাহা বলেন, “পুজো আর চৈত্র সেল আমাদের প্রধান মরসুম। এর মধ্যে কখন ইদ ঢুকে পড়ে আলাদা করে বুঝতে পারি না। কিন্তু এ বার পুজো এবং ইদের মধ্যে তিন-চার মাসের ফারাক হওয়ায় খুবই ভাল হয়েছে। একটা অতিরিক্ত বাজার আমরা পেয়ে গেলাম।’’ ওড়নার পাইকারি বিক্রি করেন রিন্টু ভৌমিক। তিনি জানান, ২৫ থেকে ১২৫ টাকা দামের ওড়না বেশি বিক্রি হচ্ছে।

বহরমপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ী সুজন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনান্য বছর এই সময় মাছি তাড়াতে হয়, এবার কিন্তু বাজার ক্রমশ জমছে।” নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহার কথায়, ‘‘ইদ এবার অনেক এগিয়ে আসায় নতুন একটা মরসুম পেয়ে গেলেন ব্যবসায়ীরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন