West Bengal Lockdown

মজুরি নেই, বাড়ির পথে সাইকেলেই

তাঁত শ্রমিকদের একাংশ জানান, শান্তিপুরের ফুলিয়া এলাকায় তাঁত শ্রমিকদের অনেকেই কোচবিহারের বাসিন্দা।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০৩:১৫
Share:

নিজস্ব চিত্র

কর্মসূত্রে সুদূর উত্তরবঙ্গ থেকে এসেছিলেন ওঁরা। লকডাউনে আটকে পড়েছিলেন। বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব ছিলেন। দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাড়ির লোকেরাও। শেষ পর্যন্ত সাইকেলে চেপেই ফুলিয়া থেকে কোচবিহারে রওনা দিলেন তাঁত শ্রমিকদের একাংশ।

Advertisement

তাঁত শ্রমিকদের একাংশ জানান, শান্তিপুরের ফুলিয়া এলাকায় তাঁত শ্রমিকদের অনেকেই কোচবিহারের বাসিন্দা। তাঁরা ব্যবসায়ীদের বাড়িতে তাঁত বোনার পাশাপাশি থাকেন, খান। বছরে দু’বার পুজোর সময়ে আর মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ বাড়িতে ফেরেন। তা ছাড়া জরুরি দরকারে বাড়িতে যান। লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় তাঁদের অনেকেই বাড়িতে ফিরতে পারেননি। এ দিকে বন্ধ কাজও। মিলছে না মজুরি। এমন অবস্থায় বাড়িতে ফিরতে চাইছিলেন এই তাঁত শ্রমিকেরা। সুদূর কোচবিহারেও তাঁদের পরিবারের লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে তাঁদের ফেরার অপেক্ষা করছিলেন। নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ ছিল, তবে বাড়ি যাওয়ার জন্যও উদগ্রীব ছিলেন তাঁরা। গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। তবে সফল হননি। শেষ পর্যন্ত কেউ কেউ সাইকেলে চেপে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বাড়ি ফিরতে ইচ্ছুকদের একাংশ জানান, এলাকার থেকেই তাঁরা জোগাড় করেছেন সাইকেল। কেউ বা ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ সাইকেল কিনেছেন। শুক্রবার মাঝ রাতে জনা পনেরোর একটি দল কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দেন। কয়েকটি আলাদা আলাদা দলে ভাগ হয়ে এ দিন রাত প্রায় আড়াইটে নাগাদ তাঁরা বার হন। চিড়ে, মুড়ি, বিস্কুটের মতো হালকা খাবার খেয়ে বার হন তাঁরা। সঙ্গেও কিছু নিয়েছেন। ঠিক করেছেন রাস্তায় কোনও খাবার দোকান খোলা পেলে খাবেন। তাঁদের কেউ কেউ এ দিন বিকেলেই পৌঁছে গিয়েছেন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে।

Advertisement

তবে এতটা রাস্তা সাইকেল চালানো অভ্যাস নেই কারও। তাই মাঝেমধ্যে থেমে বিশ্রামও নিতে হচ্ছে। এক তাঁত শ্রমিক ফোনে বলেন, “রাস্তায় হালকা খাবার দিয়ে কাজ চালিয়েছি। জঙ্গিপুরের কাছে একটি দোকানে ভাত, ডাল, তরকারি খেয়ে আবার রওনা দিয়েছি। রাতে যেখানেই হোক মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেব।’’

প্রত্যেকেরই বাড়িতে পরিজনেরা পথ চেয়ে আছেন। কিন্তু এতটা পথ সাইকেলে পৌছানোটা ঝুঁকির হবে কি? তাঁরা বলছেন, “এত দিন আটকে রয়েছি। কাজও নেই। বাড়িতেও সবাই চিন্তা করছে। বাড়ির জন্য আমাদেরও ঘুম হচ্ছেনা। বাড়িতে ফেরার জন্যই তো এতকিছু।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement