Satyajit Biswas Murder Case

‘রেকর্ড শুনিনি’, বুদ্ধদেবের পরে  ‘বিরূপ’ ভাগ্নেও

অভিযুক্তের আইনজীবী সুবীর দেবনাথও ওই সাক্ষীকে জেরা প্রসঙ্গে দাবি করেন, ভবানী ভবনে পুলিশ তাঁকে বেশ কিছু সাদা কাগজ সই করিয়ে নিয়েছিল।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

নদিয়া শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৮
Share:

তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। — ফাইল চিত্র।

ফের এক সাক্ষী ‘বিরূপ’ হলেন কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায়। বৃহস্পতিবার বিধাননগর ময়ূখ ভবনে বিশেষ আদালতে বিচারক মনোজজ্যোতি ভট্টাচার্যের এজলাসে সাক্ষ্য দিতে তিন জন এসেছিলেন। তাদের মধ্যে দীনেশ মণ্ডলকে সরকারি কৌঁসুলি অসীম দত্ত ‘বিরূপ’ ঘোষণা করেন। তিনি ছিলেন এ দিনের শেষ সাক্ষী।

Advertisement

সরকারি কৌঁসুলির জিজ্ঞাসার জবাবে দীনেশ জানান, তিনি তাঁর মামা বুদ্ধদেব মণ্ডলের সঙ্গে ভবানী ভবনে গিয়ে টিভি দেখেছিলেন। কিছু কাগজপত্র দেখিয়ে কৌঁসুলি জানান, সেখানে দীনেশের সই রয়েছে। দীনেশ জানান, পুলিশের কথায় তিনি কাগজে সই করেছেন। কৌঁসুলি বলেন, “আপনার মামার (বুদ্ধদেব মণ্ডল) রেকর্ড করা কথোপকথন পুলিশ আপনাকে শুনিয়েছিল। শুনে আপনি বলেছিলেন, সেটা আপনার মামার গলা।” সাক্ষী দাবি করেন, এমন কিছু হয়নি। এর পরেই সরকারি কৌঁসুলি তাঁকে ‘বিরূপ’ ঘোষণা করেন।

এর পর অভিযুক্তের আইনজীবী সুবীর দেবনাথও ওই সাক্ষীকে জেরা প্রসঙ্গে দাবি করেন, ভবানী ভবনে পুলিশ তাঁকে বেশ কিছু সাদা কাগজ সই করিয়ে নিয়েছিল। দীনেশ তাতে সম্মতি জানান। ঘটনাচক্রে, বুধবারই বুদ্ধদেব মণ্ডলকে ‘বিরূপ সাক্ষী’ ঘোষণা করা হয়েছিল।

Advertisement

এ দিনের প্রথম সাক্ষী বিশ্বজিৎ সূত্রধর জানান, তিনি হাঁসখালিরই বাসিন্দা। ওই খুনের মাসখানেক পর পুলিশ তাঁকে ভবানীভবনে নিয়ে গিয়ে একটি কথোপকথনের অডিয়ো রেকর্ডিং শোনায়। সেটি তাঁদের এলাকার অভিজিৎ পুন্ডারির (এই খুনে ধৃত অভিযুক্ত) গলা বলে তিনি চিনতে পেরেছিলেন। ভবানীভবনে তাঁকে যে ঘরে বসানো হয়েছিল সেই ঘরে আর এক জন অপরিচিত লোক ছিলেন, যিনি বুদ্ধদেব মণ্ডল বলে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন।

অভিযুক্তের আইনজীবী বলেন, “আপনি যে ভবানীভবনে গিয়েছিলেন তার কোনও নোটিস বা কাগজপত্র দেখাতে পারবেন?” সাক্ষী বলেন, “না।” আইনজীবী জানতে চান, সাক্ষী আগে কখনও অভিজিৎ পুন্ডারির কোনও রেকর্ড করা কথা শুনেছিলেন কি না? সাক্ষী জানান, শোনেননি। আইনজীবীর প্রশ্ন: পুলিশ কিসের সাহায্যে তাঁকে রেকর্ড করা কথোপকথন শুনিয়েছিল? বিশ্বজিৎ জানান, তা তিনি বলতে পারবেন না। আইনজীবী দাবি করেন, তিনি আদৌ ভবানীভবনে যাননি। পুলিশ ও দলীয় নেতাদের কথা মতো হাঁসখালি থানায় বসে সাদা কাগজে সই করেছেন। সাক্ষী তা অস্বীকার করেন।

এ দিনের দ্বিতীয় সাক্ষী ছিলেন সঞ্জিত মণ্ডল ওরফে ফটিক জানান, ২০১৮ সালে তাঁর কাছে জমি বন্ধক রেখে সুজিত মণ্ডল (এই খুনে ধৃত অভিযুক্ত) প্রথমে ২০ হাজার এবং পরে ১০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে জমি বন্ধকের নথি আদালতে পেশ করেন সরকারি কৌঁসুলি। অভিযুক্তের আইনজীবী জানতে চান, বন্ধক রেখে টাকা ধার দেওয়ার লাইসেন্স আছে? সাক্ষী জানান, নেই। পরের প্রশ্ন: তিনি কি দলিল জমা রেখেছিলেন? সঞ্জিত জানান, রাখেননি। আইনজীবীর প্রশ্ন: সুজিত আদৌ সেই জমির মালিক কি না তা কি সাক্ষী জানেন? সঞ্জিত জানান, তিনি জানেন না। আইনজীবী দাবি করেন, তিনি মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছেন। সঞ্জিত তা অস্বীকার করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন