গত কয়েক বছরের প্রবণতা বজায় থাকল এ বারও। আজ, সোমবার রাজ্যজুড়ে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষা। দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলা—নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের এ বারও ছাত্রের থেকে ছাত্রীরা বেশি সংখ্যায় পরীক্ষায় বসছে। মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা প্রায় তিনগুণ।
মুর্শিদাবাদের ১৬,২২৪ জন পড়ুয়া আজ পরীক্ষায় বসবে। তার মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা মাত্র ৪,৯৭৫। আর ছাত্রীর সংখ্যা ১১,২৪৯। ভারপ্রাপ্ত জেলা আধিকারিক (মাদ্রাসা শিক্ষা) ইফতিখার আহমেদ জানান, ৩০টি কেন্দ্রে এ বছর পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারে, সে ব্যাপারে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। পরীক্ষা শুরু হবে বেলা পৌনে ১২টায়। পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। পরীক্ষা চলবে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
শেষ আদমসুমারি অনুযায়ী, সারা দেশেই নারীদের শিক্ষার হার পুরুষের তুলনায় কম। কিন্তু ফি বছর হাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় ছাত্রীর সংখ্যা কেন এত বেশি? ইফতিখার আহমেদ জানাচ্ছেন, মুর্শিদাবাদ এমনিতেই অর্থনৈতিক ভাবে অনগ্রসর। জেলায় কাজের সুযোগ সে ভাবে নেই। ফলে মানুষের অভাব রয়েছে। ছেলেরা একটি বড় হতেই ট্রেনে চেপে ভিন রাজ্যে বা কখনও বা ভিন দেশেও কাজে চলে যায়। মাঝপথেই থেমে যায় তাদের পড়াশোনা। অন্যদিকে মেয়েরা বিয়ের আগে পর্যন্ত পড়াশোনাটা চালিয়ে যায়। আর তার ফল হল ফি বছর পরীক্ষায় ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি।
অন্য দিকে, নদিয়ায় ১৬টি মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা ৪টি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২,২২৬। নদিয়াতেও এ বছর ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। রাজ্য মাদ্রাসা বোর্ডের এক কর্মচারী দেলওয়ার হোসেে বলেন, ‘‘এ বছর নদিয়ায় প্রায় দেড় হাজার জন ছাত্রী ও ৭০০ জন ছাত্র পরীক্ষা দেবে।’’
নির্বিঘ্নে পরীক্ষা শেষ করতে প্রশাসন পরীক্ষাকেন্দ্রে মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থা করেছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার মোড়গুলিতে যাতে কোনও রকম যানজট না তৈরি হয়, সে দিকে নজর দেবে পুলিশ। নদিয়ার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মিতালি দত্ত বলেন, “পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য আমরা সব রকমের পদক্ষেপ করেছি।’’