বাসনে স্নানের জল, মারে মৃত

পুলিশ সূত্রের খবর, গত শুক্রবার পাড়ার পুকুরে গিয়েছিলেন কল্পনা বিশ্বাস (৪৫) ও শম্পা সাহা। একই পাড়ায় থাকেন। পরিচিতি ছিল আগে থেকেই। স্নান করছিলেন কল্পনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০৪:৩৬
Share:

শোকার্ত পরিজন। —নিজস্ব চিত্র

সামান্য বিষয় নিয়ে গ্রামের দুই মহিলার মধ্যে ঝগড়া। তার জেরে প্রাণটাই চলে গেল এক জনের! অকিঞ্চিৎকর ঘটনার এমন পরিণতিতে কার্যত হতভম্ব কোতয়ালি থানার তিন নম্বর সমরপল্লি ভাটপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। গোটা পাড়া থমথম করছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গত শুক্রবার পাড়ার পুকুরে গিয়েছিলেন কল্পনা বিশ্বাস (৪৫) ও শম্পা সাহা। একই পাড়ায় থাকেন। পরিচিতি ছিল আগে থেকেই। স্নান করছিলেন কল্পনা। পাশে বাসন মাজছিলেন শম্পা। স্নান করার সময় জল ছিটকে লাগে শম্পার গায়ে ও বাসনে। তাই নিয়ে শুরু হয় ঝগড়া। অভিযোগ, তার জেরেই ওই দিন রাতে পাড়ার আরও কয়েক জনকে সঙ্গে এনে কল্পনার উপর চড়াও হন শম্পা। এলোপাথাড়ি মারা হয় তাঁকে। চুলের মুঠি ধরে বেকায়দায় মাথা ঠুকে দেওয়া হয় দেওয়ালে, ঘুঁষি মারা হয় পেটে। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে পড়লে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।

মৃত কল্পনা বিশ্বাস

Advertisement

এর কিছুক্ষণের মধ্যে কল্পনাদেবী রক্তবমি করতে থাকেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে কৃষ্ণনগরে শক্তিনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কল্পনাদেবীর স্বামী প্রফুল্ল বিশ্বাস পাঁচ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে প্রধান অভিযুক্ত শম্পা সাহা-সহ চার জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, কল্পনাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য তাঁদের ছিল না। তাঁরা শুধু কল্পনার দুর্ব্যবহারের জন্য তাঁকে একটু শিক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে যে কল্পনা মারা যাবেন সেটা তাঁরা বুঝতে পারেননি।

কিন্তু এই ঘটনার পরেই যে প্রশ্নটা এলাকার অনেকের মধ্যেই উঠছে তা হল, এত সামান্য ঘটনায় মানুষ এতটা অসহিষ্ণু এবং মারমুখী কেন হয়ে উঠবে যে কারও প্রাণ নিতেও পিছপা হবে না? মনোচিকিৎসক সুব্রত বিশ্বাসের ব্যাখ্যায়, ‘‘পুরনো বিবাদের জেরে পারস্পরিক বিদ্বেষ হয়তো ওই মহিলাদের মধ্যে ছিল। সেটা নতুন ঘটনার ইন্ধন পেয়েছে। কিন্তু যেটা উদ্বেগের তা হল, মানুষের জীবনে জটিলতা মাত্রাছাড়া হচ্ছে। সেটা তাঁদের স্নায়ুতন্ত্রে বা তাঁদের মনে এতটা চাপ ফেলছে যে এতি সামান্য মনোমালিন্য বা মতভেদ তারা সহ্য করতে পারছে না। মারাত্মক ভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। এই ঘটনা তারই ফল।’’ জেলা পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের এক জন পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন