নিজস্বীর ঝোঁক ফের প্রাণ কাড়ল এক তরুণের। মহালয়ার সকালে কল্যাণী স্টেশনের কাছে রেললাইনে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক তরুণের। গুরুতর জখম ক্লাস এইটের এক ছাত্র। দু’বছর আগে এই কল্যাণীতেই প্রায় একই রকম দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
মৃতের নাম রাকেশ ত্রিগুণা (২২)। বাড়ি বিহারের সাসারামে। তাঁর বাবা রামনাথ ত্রিগুণা কল্যাণীতে একটি বেসরকারি হোটেল ম্যানেজমেন্ট কলেজের নিরাপত্তারক্ষী। রাকেশের সঙ্গী, কল্যাণী শিক্ষায়তনের ক্লাস এইটের ছাত্র সুরজ মণ্ডল বর্তমানে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি।
পুলিশ সূত্রের খবর, রাকেশের বাবা আনন্দনগরে থাকেন। সাসারামে এক কলেজে পলিটেকনিকে ডিপ্লোমা করে মাস দুই আগে রাকেশ তাঁর কাছে এসেছিলেন। তিনি চাকরি খুঁজছিলেন। প্রতিবেশী সুরজের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। মঙ্গলবার, মহালয়ার ভোরে তার সঙ্গে গঙ্গায় যাবেন বলে দু’জনে বেরোন। পথে সাহেববাগানের কাছে ৪২ নম্বর রেলগেটের কাছে এসে নিজস্বী তোলার আব্দার করে সুরজ। রেলপুলিশের কথা অনুযায়ী, লাইনের দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুলছিলেন দু’জনে। ডাউন কৃষ্ণনগর-শিয়ালদহ লোকাল আসছিল ওই লাইন দিয়ে। শব্দবাজি আর মাইকের শব্দে সম্ভবত তা শুনতে পাননি ওঁরা। ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাকেশের। সুরজকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাকে কলকাতায় পাঠানো হয়।
রাকেশের বোন প্রিয়াঙ্কার কথায়, ‘‘দাদা কল্যাণীর কিছু চিনত না বলে সুরজের সঙ্গে সব জায়গায় যেত।’’ রামনাথ বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী বিহারে। ও বলেছিল, ছেলেটা কিছু চেনে না। ওকে নজরে রেখো। এখন ওকে কী জবাব দেব।’’
২০১৫-র নভেম্বরে কল্যাণীর শিল্পাঞ্চল স্টেশনের কাছে রেললাইনে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তোলার সময়ে ট্রেনের ধাক্কায় মারা যান কল্যাণী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সৌরভ দে। জখম হন বন্ধু অভিষেক রায়। তার পরে কলেজে কর্মশালা হয়। পুলিশও স্কুলে-কলেজে প্রচার করে। তাতে যে কাজ বিশেষ হয়নি মঙ্গলবার সকালের ঘটনা সেটাই ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।