অনাস্থা কাটিয়ে ফের পদে প্রধান

সিপিএম এর সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী হলেন তৃণমূলের প্রধান। আর একই সঙ্গে পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দলেরই উপ-প্রধান। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণনগর-১ ব্লকের ভাতজাংলা গ্রাম পঞ্চায়েতে। ১৮ অগষ্ট তৃণমূলেরই প্রধান ও উপ-প্রধান পরস্পরের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। সেই মতো মঙ্গলবার ছিল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার তলবী সভা। সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ী হন প্রধান গৌরী সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১২
Share:

সিপিএম এর সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী হলেন তৃণমূলের প্রধান। আর একই সঙ্গে পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দলেরই উপ-প্রধান। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণনগর-১ ব্লকের ভাতজাংলা গ্রাম পঞ্চায়েতে। ১৮ অগষ্ট তৃণমূলেরই প্রধান ও উপ-প্রধান পরস্পরের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। সেই মতো মঙ্গলবার ছিল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার তলবী সভা। সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ী হন প্রধান গৌরী সরকার।

Advertisement

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন পঞ্চায়েতের ২৭ জন সদস্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১৯ জন সদস্য। তারমধ্যে এক জন সিপিএম সদস্য ভোট দেননি। বাকি ১৮ জন সদস্যই গৌরীদেবীর পক্ষে ভোট দেন। এ দিন গৌরীদেবীর পক্ষে তৃণমূলের ১৩ জন, সিপিএময়ের ৩ জন ও নির্দলের দু’জন ভোট দেন। প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে ছিলেন যে উপ-প্রধান তৃণমূলেরই সেই বিজন মজুমদারই এ দিন সভায় উপস্থিত ছিলেন না। তবে এ দিনই তিনি বিডিও-র হাতে পদত্যাগ পত্র তুলে দেন। কারণ হিসাবে বিজনবাবু বলেন, “পঞ্চায়েতের কাজে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারছিলাম না। তাতে এলাকার উন্নয়নে সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণে ইস্তফা দিলাম।” তবে বিজনবাবুর মুখের কথাকে আমল দিতে নারাজ তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী। তাঁদের দাবি, অনাস্থা ভোটে হার নিশ্চিত জেনে বিজনবাবু ইস্তফা দিলেন। প্রধান গৌরী সরকার বলেন, “আমার কাজে খুশি হয়ে সকলে আমাকে সমর্থন করলেন।” সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, “উপ-প্রধানের ইস্তফা দেওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না। উনি বুঝতে পেরেছিলেন ওর হার নিশ্চিত।” পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, অনাস্থা প্রস্তাব আনার সময় যাঁরা তাঁর পাশে ছিলেন, পরবর্তীকালে তাঁদের অনেকেই সরে গিয়ে প্রধানের পক্ষে চলে যান।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাতজাংলা গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ১৩টি, কংগ্রেস ৭টি, সিপিএম ৪ টি ও নির্দল প্রার্থীরা ৩টি আসনে জিতেছিলেন। নির্বাচনের আগে থেকেই টিকিট পাওয়া নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। ফল প্রকাশের পর প্রধান ও উপ-প্রধান নির্বাচনের আগে সেই কোন্দল চরম আকার ধারণ করে। তৃণমূলেরই দু’টি গোষ্ঠী পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের ৪ জন, কংগ্রেসের ৭ জন, সিপিএময়ের ৩ জন ও একজন নির্দল সদস্যের সমর্থন নিয়ে প্রধান হন তৃণমূলের গৌরী সরকার ও উপ-প্রধান হন কংগ্রেসের বিজন মজুমদার। পরবর্তীকালে বিজনবাবু-সহ কংগ্রেসের ৬ জন সদস্য ও একজন নির্দল সদস্যও তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু তাতেও গোষ্ঠী কোন্দল রোখা যায়নি। একদা ঘনিষ্ট প্রধান ও উপ-প্রধানের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তা চরম আকার ধারণ করলে উভয়ই তাদের ঘনিষ্ট সদস্যদের নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। প্রধান গৌরী সরকার সহ ১০ জন সদস্য নিয়ে ও উপ-প্রধান সহ ১৪ জন সদস্য মিলে একে অপরের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। আজ উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার তলবী সভা। কিন্তু তার আগেই তিনি পদত্যাগ করলেন। অবশ্য তাঁর পদত্যাদ করা নিয়ে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “ভাতজাংলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষয়টি স্থানীয় বিধায়কের উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনিই সকলের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করছেন।”

Advertisement

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন