কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার মূল অভিযুক্ত অজয় দলুইকে আটক করার ছয় দিন পর গ্রেফতার করল মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ। মঙ্গলবার অভিযুক্ত অজয় দলুইকে কান্দি মহকুমা আদালতে তুলে দশ দিনের হেফাজতে চায় কান্দি থানার পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের বিচারক শ্রীধর সু সেই আবেদন মঞ্জুর করে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান অজয়কে।
গত ৬ মে কান্দি থানার মহালন্দি গ্রামে মামার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় কলকাতার পাতিপুকুরের কিশোরী ঋতু সিংহ। ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অজয় দলুইকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না বলে উচ্চ আদালতে মামলা করেন ওই কিশোরীর বাবা কমল সিংহ। গত ৪ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া ১৩ অগস্টের মধ্যে নিখোঁজ ওই কিশোরীকে খুঁজে এনে আদালতে হাজির করাতে না পারলে পুলিশকর্মীদেরই জেলে পোরা হবে বলে মন্তব্য করেন। এরপরই নড়েচড়ে বসে মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ। গত ৬ অগস্ট মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানা এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত অজয় দলুইকে আটক করা হয়। টানা পাঁচ দিন ধরে জেলা পুলিশের কর্তারা দফায়-দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কখনও কান্দি তো কখনও বহরমপুরে নিয়ে যায় অজয়কে।
পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে কিশোরীর তল্লাশি চলছে দেশের একাধিক প্রান্তে। মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “অনেক তথ্যই আমাদের হাতে আসছে। তবে সেগুলি এখনই সংবাদমাধ্যমকে বলা সম্ভব নয়। আমরা আশাবাদী উচ্চ আদালতের নির্ধারিত সময়ে ওই কিশোরীকে হাজির করাতে পারব। দেখা যাক কী হয়।”
মেয়েকে এখনও না পেলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশে পুলিশি তৎপরতা দেখে খুশি ওই কিশোরীর বাবা কমল সিংহ। এদিন কান্দি আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে কমলবাবু বলেন, “এখন পুলিশ যে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে তাতে আমি আমার মেয়েকে ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছি নতুন করে। অজয় দলুই যে ওই ঘটনায় জড়িত, সেটা আমি প্রথম থেকেই দাবি করছি। পুলিশ যদি সেই সময় এই তৎপরতা দেখাত তাহলে অনেক আগেই আমার মেয়েকে ফিরে পেতাম।” অভিযুক্ত অজয়ের স্ত্রী অপর্ণা দলুই অবশ্য দাবি করেন, “আমার স্বামী ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। পুলিশ অযথা আমার স্বামীকে ধরে রেখে মারধর করছে। ওই কিশোরী নিজেই ভালবেসে অন্য ছেলের সঙ্গে পালিয়েছে। পুলিশ সেটার প্রমাণ পেয়ে যাবে ঠিক।”
কিশোরীর বাড়ির আইনজীবী রজতশুভ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ দশ দিনের হেফাজত চেয়েছিল। বিচারক সেটা মঞ্জুর করে ২০ অগস্ট ফের অজয়কে আদালতে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন।