কুপিয়ে খুন বিছানায়, ধৃত স্ত্রী

ঘুমন্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল তাঁরই স্ত্রী ও ভাইপোর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার গভীর রাতে সাগরদিঘি থানার গোবর্ধনডাঙা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম আশরাফ আলি (৪০)। অভিযুক্ত ভাইপো পালিয়ে গেলেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে মৃতের স্ত্রী বছর তিরিশের সেলিমা বিবিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:০১
Share:

ঘুমন্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল তাঁরই স্ত্রী ও ভাইপোর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার গভীর রাতে সাগরদিঘি থানার গোবর্ধনডাঙা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম আশরাফ আলি (৪০)। অভিযুক্ত ভাইপো পালিয়ে গেলেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে মৃতের স্ত্রী বছর তিরিশের সেলিমা বিবিকে।

Advertisement

পুলিশের দাবি, মৃতের স্ত্রী-র সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁরই ভাসুরের ছেলে বছর একুশের সাজিদ শেখের। উভয়ে পরিকল্পনা করেই মঙ্গলবার গভীর রাতে খাটে ঘুমন্ত অবস্থায় আশরাফকে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছেন। সাগরদিঘি থানার ওসি পিন্টু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জেরায় সেলিমা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলায় চেপে ধরা হয়। তারপরেই খাটের তলায় রাখা খুনের অস্ত্র রক্তাক্ত বঁটিটি দেখিয়ে দিয়েছে সেলিমা। পুলিশ সেটি আটক করেছে।

পেশায় কৃষিজীবী আশরাফেরা নয় ভাই। গ্রামেই হাইস্কুল লাগোয়া পাড়ায় পাশাপাশি সপরিবারে থাকেন সাত ভাই। আশরাফের তিন ছেলের মধ্যে এক জন থাকে পাশের গ্রামে তার ঠাকুমার কাছে। বাকি দু’জন দম্পতির সঙ্গে। আশরাফ যে ঘরে খুন হন, তার পাশের ঘরেই ছিলেন দাদা ইদুয়ানের ছেলে হানিফ ওরফে নয়ন শেখ। তিনি বলেন, “মাঝরাতে হঠাত্‌ কান্নার চিত্‌কার শুনে ঘুম ভেঙে যায়। বেরিয়ে এসে দেখি কাকিমা কাঁদছে। খাটের উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন কাকা।”

Advertisement

হইচই-আওয়াজে ততক্ষণে গ্রামের লোকজন ভিড় করতে শুরু করেছেন ওই বাড়িতে। প্রতিবেশী গাজলু শেখ বলেন, হইচই শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখি এক যুবক ছুটে পালাচ্ছে রাস্তা দিয়ে। আমরা কয়েকজন মিলে তাকে ধরে ফেলি। দেখি সে সাজিদ। কিছু একটা দুষ্কর্ম করেছে ভেবে তাকে ধরে নিয়ে যাই আমরা। তখনও জানি না আশরফের নৃশংস মৃত্যুর ঘটনা।” সাজিদকে নিয়ে প্রতিবেশীরা এরপর আশরাফের বাড়িতে যান। সেখানে তাঁর স্ত্রী সেলিমা বোঝাচ্ছিলেন, অন্ধকারে বাইরের কেউ এসে স্বামীকে ভোজালি দিয়ে মেরে পালিয়ে গিয়েছে। কী ভাবে আততায়ী পালাল, তা নিয়ে জল্পনার মাঝেই সাজিদ অন্যদের ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। তখনই গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়।

এক প্রতিবেশী জাহিরুদ্দিন শেখ বলেন, “সাজিদের সঙ্গে সেলিমার মেলামেশার কথা লোকজন জানত। সাজিদ পালিয়ে যেতেই পরিষ্কার হয়ে যায় দু’জনে মিলেই যোগসাজশ করে খুন করেছে।” তবে সাজিদ কর্মসূত্রে চেন্নাইতে থাকে। কখন সে গ্রামে এল জানে না পরিবারের লোকেরাও।

সাগরদিঘি থানার ওসি পিন্টু মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে চেন্নাই থেকে দিন তিনেক আগে রওনা দেয় সাজিদ। মঙ্গলবার গভীর রাতে ট্রেন ধরে গ্রামে এসে ঢোকে সে। সেলিমার সঙ্গে মোবাইলে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তার। দরজা খোলাই রেখেছিল সেলিমা। এ দিন দু’জনে মিলে খুন করে আশরফকে। ”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন