কৃষি আধিকারিক নেই কান্দি মহকুমার ভরতপুর ২ (সালার) ব্লকে। ফলে সরকারি ভাবে মুর্শিদাবাদ জেলায় ধানের বীজ বিলি হলেও তা পাচ্ছেন না ওই ব্লকের চাষিরা। ক্ষুব্ধ চাষিদের বক্তব্য, বহু বার বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতিতে জানানো হয়েছে সমস্যার কথা। কিন্তু চাষিদের কথায় গুরুত্ব দেয় না কেউ। পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কংগ্রেসের মোহিত দে বলেন, “আমাদের এলাকার ৬০ শতাংশ মানুষ কৃষিজীবী। অথচ প্রশাসনিক কাঠামোর ত্রুটিতে চাষিরা সরকারি বীজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমি বহুবার জেলার বৈঠকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয় না।”
এক-দু’বছর নয়, প্রায় এক দশক ধরে এই ব্লকে স্থায়ী কৃষি আধিকারিক নেই। যার জন্য চাষবাসে প্রয়োজনীয় তথ্য বা উপদেশ দেওয়ার মতো প্রশাসনের কাউকে পাশে পান না চাষিরা। মাঝে-মধ্যে অন্য ব্লক থেকে কৃষি আধিকারিকরা দায়িত্ব নেন। কিন্তু কিছু দিন থাকার পরে ফের তাঁরাও চলে যান। কয়েক বছর আগে এই ব্লকে চাষের কাজের সরঞ্জাম যেমন, ধান ঝাড়াই মেশিন, স্প্রে-মেশিন-সহ কৃষি কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম নিতে ইচ্ছুক চাষিদের কাছে আবেদনপত্র চেয়েছিল কৃষি দফতর। সেই মতো এলাকার বহু চাষি ওই আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ওই সব সরঞ্জাম এখনও বিলি করতে পারেনি কৃষি দফতর। চাষি প্রকাশ ঘোষ বলেন, “কৃষি দফতরের নির্দেশ মতো আমি ওই সরঞ্জামের জন্য আবেদন করি। কিন্তু কোনও কিছুই পাইনি। ব্লকে কৃষি আধিকারিক নেই বলেই এমনটা হচ্ছে।” সমস্যার কথা মেনে ভরতপুর ২-এর বিডিও অর্ণব চিন্যা বলেন, “এলাকার চাষিরা আমাদের কাছে এসে চাষ সম্পর্কে জানতে আসে কিন্তু আমরা কিছুই বলতে পারি না।”
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার আমন ধান চাষের জন্য মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় তিন লক্ষ মেট্রিক টন ধানের বীজ বিলি করা হচ্ছে ২৩টি ব্লকের চাষিদের। বিঘা প্রতি জমিতে ৬ কিলোগ্রাম করে ওই বীজ মিলছে। যেমন কান্দি ব্লকে ৩৫ টন ধানের বীজ ৩১৩২ জন চাষিকে বিলি করা হয়েছে। অন্য দিকে বড়ঞা ব্লকে ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার চাষিদের ৪০ টন ধানের বীজ বিলি করার কাজ চলছে। শুধু ভরতপুর ২ ব্লক এলাকার চাষিরা বিনামূল্যে সরকারি বীজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সালারের চাষি রফিক শেখ, ব্রজেশ্বর মণ্ডলরা বলেন, “ বাধ্য হয়ে বাজার থেকে ধানের বীজ কিনে চাষ করতে হল।” মুর্শিদাবাদ জেলা কৃষি আধিকারিক দীনেশ পাল মেনে নেন, “কৃষি আধিকারিক না থাকার কারণে ওই ব্লকে ধানের বীজ বণ্টনে অসুবিধা হচ্ছে।” সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।