ক্ষমা নয়, ঘরশত্রুদের শাস্তি চাইছেন ছাত্রীরা

যাঁদের ক্ষমা চাওয়ার কথা তাঁরা চাইলেন না। তাঁদের সাজাও হল না। পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিযুক্ত ছাত্রনেতাদের হয়ে ক্ষমা চাইলেন নদিয়ার টিএমসিপি জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভিজল না। কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের টিএমসিপি নেত্রীরা জানিয়ে দিলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা না নিলে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের প্রশ্ন ওঠে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩০
Share:

যাঁদের ক্ষমা চাওয়ার কথা তাঁরা চাইলেন না। তাঁদের সাজাও হল না।

Advertisement

পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিযুক্ত ছাত্রনেতাদের হয়ে ক্ষমা চাইলেন নদিয়ার টিএমসিপি জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভিজল না। কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের টিএমসিপি নেত্রীরা জানিয়ে দিলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা না নিলে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের প্রশ্ন ওঠে না। মাজদিয়া থেকে চাপড়া, বহু কলেজেরই সাধারণ ছাত্রীরা তাঁদের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন।

উইমেন্স কলেজের ছাত্রীদের মূল অভিযোগ কৃষ্ণনগর দ্বিজেন্দ্রলাল কলেজের কিছু টিএমসিপি নেতার বিরুদ্ধে, যাঁরা গোষ্ঠী বদলের জন্য তাঁদের চাপ দিচ্ছিলেন। তাতে রাজি না হওয়াতেই ওই ছাত্রনেতারা বাড়িতে ফোন করে হুমকি দিচ্ছিলেন, এমনকী নিজের সংগঠনের মেয়েদের উত্ত্যক্তও করছিলেন। প্রতিবাদ করায় গত মঙ্গলবার উইমেন্স কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক পায়েল হালদারের দাদাকে মারধরও করা হয়। এই সব অভিযোগ নিয়েই পায়েল-সহ ছাত্র সংসদের মোট ১২ জন বৃহস্পতিবার জেলা সভাপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন। মধ্যস্থতার চেষ্টা করেও তাঁদের সেই সিদ্ধান্ত থেকে নড়ানো যায়নি।

Advertisement

টিএমসিপি সূত্রের খবর, ওই রাতেই অয়ন পায়েলের বাড়ি যান। শুক্রবার তিনি বলেন, “পায়েলের বাড়িতে গিয়ে সংগঠনের তরফে ক্ষমা চেয়েছি। তাঁরাও ক্ষমা করেছেন। পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করবেন বলে জানিয়েছেন।” কিন্তু অভিযুক্তেরা ক্ষমা চাইছেন না কেন? অয়নের দাবি, “যে ছেলেটি পায়েলের দাদাকে মেরেছিল সে ক্ষমা চেয়েছে। ছাত্রীদের যারা উত্ত্যক্ত করত তাদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেব।” দ্বিজেন্দ্রলাল কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শুভ ঘোষ জানান, কারা ওই ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত, তা তাঁরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু এর পরেও যে প্রতিবাদী ছাত্রীরা চাপের মুখে, তা স্পষ্ট। এ দিন পায়েলের বাড়িতে গেলে বলা হয়, তিনি নেই। ফোনেও যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মা বলেন, “আমরা আর এ সবের মধ্যে থাকতে চাই না।” তবে জানান, অয়নবাবু ও স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পদত্যাগী ১২ ছাত্রীর এক জন বলেন, “আগেই জানতাম, দল থেকে চাপ আসবে। কিন্তু সেটা যে এমন হবে, বুঝতে পারিনি।”

তাঁরা একা নন। মাজদিয়া সুধীরঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী জানান, উইমেন্স কলেজের মেয়েরা যা করল, তাতে তাঁরা গর্বিত। চাপড়া বাঙ্গালঝি কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, ‘‘অনেককেই উত্ত্যক্ত করা হয়। উইমেন্স কলেজের মেয়েদের পাশে আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন