কল্যাণীতে দাদা-বোনকে মারধরের ঘটনায় অবশেষে তিন যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ।
রবিবার রাতে নদিয়ার কল্যাণী পুরসভার তালতলা এলাকার বাড়ি থেকে শীতল হালদার, অর্পণ সরকার এবং সঞ্জয় মণ্ডল নামে তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত তিন যুবক এলাকায় তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। তাঁদের তৃণমূলের বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে দেখা গিয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। যদিও কল্যাণী শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ধৃতদের সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।” সোমবার ধৃতদের কল্যাণী মহকুমা আদালতে তুলে পুলিশ পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চায়। এসিজেএম বিনয় পাঠক অবশ্য দু’দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বোনকে সঙ্গে নিয়ে কল্যাণী শহর লাগোয়া চরকাঁচড়াপাড়া পঞ্চায়েতের চরবীরপাড়া এলাকায় ছবি তুলতে গিয়েছিলেন কল্যাণীর চিত্তরঞ্জন পার্কের বাসিন্দা এক চিত্র সাংবাদিক। সেখানে কয়েকজন যুবক বোনকে উদ্দেশ করে কটূক্তি করলে বচসা বাধে। তরুণীর শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হন দাদা। তাঁর ক্যামেরার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে যুবকরা পালিয়ে যান। শুক্রবার রাতেই ওই তরুণী পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পরে তদন্তের নামে পুলিশ হয়রান করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সোমবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, “কেউ ধরা পড়েছে বলে জানি না। তবে, সেদিন যারা মারধর করছিল, তাদের দেখলেই চিনতে পারব। পুলিশ ডাকলে চিহ্নিত করতে যাব আমি।”
জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। সেই সময় ওই সব ছেলেরা বাড়ি ছাড়া ছিল। তাতে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। সেই সন্দেহের বশে ওদের তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
সেদিনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা ধৃতেরা স্বীকার করেছে বলে দাবি এসপি-র। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছেন, ভাই-বোনের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয়েছিল তাঁদের। এই নিয়ে প্রশ্ন করাতেই গণ্ডগোল বাঁধে। ক্যামেরার ব্যাগ ওই যুবকই ফেলে রেখে গিয়েছিল বলে দাবি ধৃতদের। ধৃতদের আইনজীবী বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য আবার সেদিন ঘটনাস্থলে কেউ ছিল না দাবি করে আদালতে জামিনের আবেদন জানান। বিচারক সেই আবেদন অগ্রাহ্য করে পুলিশ হেফাজতেই পাঠান তিন জনকে।