ছেলেকে আছড়ে মারলেন বাবা

অভাবের সংসারে পাঁচ সন্তানের খাবার সংস্থান নিয়ে বচসা চলছিল দম্পতির। রাগের মাথায় সদ্যোজাত শিশুপুত্রকে মায়ের কোল থেকে টেনে আছাড় মেরে খুন করলেন বাবা। বৃহস্পতিবার বিকালে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মনোহরপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০১:১৮
Share:

অভাবের সংসারে পাঁচ সন্তানের খাবার সংস্থান নিয়ে বচসা চলছিল দম্পতির। রাগের মাথায় সদ্যোজাত শিশুপুত্রকে মায়ের কোল থেকে টেনে আছাড় মেরে খুন করলেন বাবা। বৃহস্পতিবার বিকালে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মনোহরপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। আসারুল শেখ নামে ২৭ দিনের ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ওই শিশুর বাবা হিল্লাল খানকে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে আটক করে। মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “হিল্লাল মানসিক ভাবেও সুস্থ নয় বলে মনে হচ্ছে। আমরা তাকে আটক করেছি।”

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হিল্লাল খানের পাঁচ ছেলে-মেয়ে। দিনমজুরি করে কোনও মতে সংসার টানে হিল্লাল। এ দিন সকালে বাড়িতে খাওয়ার মতো কিছু ছিল না। স্ত্রী সফেদা বিবি হিল্লালকে বাজারে যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু হিল্লালের কাছে টাকাপয়সা না থাকায় সে বাজারে যায়নি। পরে কাজে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এদিকে বাড়িতে রান্না না হওয়ায় ছেলেমেয়েরা কান্নাকাটি করতে থাকে। বিকেলে হিল্লাল বাড়ি ফিরলে সফেদা তাকে খাবার নিয়ে আসার কথা বলে। তখনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসা শুরু হয়। বচসা চলাকালীন স্ত্রীর কোলে থাকা ২৭ দিনের শিশুকে কেড়ে নিয়ে মাটিতে আছাড় মারে হিল্লাল। সঙ্গে সঙ্গে ওই শিশুকে নিয়ে যাওয়া হয় ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সফেদা বলেন, “আমি স্বামীকে শুধু বলেছিলাম, খাবার দিতে না পারলে আমাদের এনেছ কেন? এই কথা বলাতে ও যে ছেলেকে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে এ ভাবে আছড়ে মেরে ফেলবে সেটা ভাবতেও পারিনি।” ভাবতে পারছেন না প্রতিবেশী লখাই শেখ, সামশুল আলমরাও। তাঁরা বলছেন, “সংসারে অভাবের কারণেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গণ্ডগোলও হতো। তাই বলে নিজের ছেলেকে মেরে ফেলবে!” তালগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের আনারুল হক বলেন, “ওই যুবক মানসিক রোগী বলেই খবর পেয়েছি। সংসারে অভাব রয়েছে। কিন্তু দু’বেলা যে খাবার জোটে না সে কথা জানতে পারলে কিছু একটা ব্যবস্থা নিশ্চয় করতাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন