টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় কলেজে ভাঙচুর

গণ-টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে কান্দি রাজা বীরেন্দ্র চন্দ্র কলেজে ভাঙচুর করল সালার কলেজের এক দল ছাত্র। মারধর করা হয়েছে শিক্ষকদের। এমনকী পরীক্ষাপত্রও ছাত্ররা ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই পরীক্ষা পরে নেওয়া হবে। আপাতত আগামী ৮, ১১ ও ১২ অগস্ট যে তিনটি পরীক্ষা ছিল, তার আসন কান্দির বিমলচন্দ্র ল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০১:১৭
Share:

গণ-টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে কান্দি রাজা বীরেন্দ্র চন্দ্র কলেজে ভাঙচুর করল সালার কলেজের এক দল ছাত্র। মারধর করা হয়েছে শিক্ষকদের। এমনকী পরীক্ষাপত্রও ছাত্ররা ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই পরীক্ষা পরে নেওয়া হবে। আপাতত আগামী ৮, ১১ ও ১২ অগস্ট যে তিনটি পরীক্ষা ছিল, তার আসন কান্দির বিমলচন্দ্র ল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের সমাজবিদ্যার পরীক্ষা ছিল এ দিন। সালার মুজফ্ফর আহম্মেদ মহাবিদ্যালয়ের ১৮৬ জন ছাত্র পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন কান্দি কলেজে। দুপুর দু’টো নাগাদ পরীক্ষা শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর এক ছাত্রের কাছ থেকে টুকলির কাগজ উদ্ধার করেন এক অধ্যাপক। আরও দু’টি কক্ষে ছাত্রদের কাছ থেকে টুকলি উদ্ধার হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি সমস্ত টুকলি কেড়ে নেওয়ার পরে ছাত্রদের কলম কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় এক ছাত্র একটি ধারালো ব্লেড নিয়ে আত্মহত্যা করার হুমকি দিতে শুরু করেন। বিপদ বুঝে কলেজ শিক্ষকরা ছাত্রের হাত থেকে ব্লেড কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন কলেজের অন্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। অভিযোগ, গণ্ডগোল চালাকালীন তিন জন শিক্ষককে মারধর করেন ছাত্ররা। কলেজের অধ্যক্ষ প্রদেশ ঘোষের জামার কলার ধরে হেনস্থা করা হয়। উত্তরপত্রও ছিঁড়ে ফেলে দেন ছাত্ররা। যদিও সালার কলেজের ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আকাশ শেখ বলেন, “আমরা শান্তিতে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। শিক্ষকরা আমাদের অর্ধনগ্ন করে টুকলির কাগজ খুঁজছিলেন। আমাদের কী কোনও সম্মান নেই? শিক্ষকরাই আমাদের উত্তরপত্র ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে মারধরও করেন শিক্ষকরা।” আর এক জন পরীক্ষার্থী ইসমাইল মির্জার অভিযোগ, “জল খাওয়ার অনুমতি নিতে গেলেই শিক্ষকরা আমাদের উপর চড়াও হন। আমাদের উত্তরপত্র কেড়ে নেন এবং মারধর করেন।”

অভিযোগ উড়িয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রদেশ ঘোষ বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রত্যেক কক্ষে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। টোকাটুকিতে বাধা দেওয়াতেই কলেজে তাণ্ডব চালিয়েছে ছাত্ররা। আমরা পুলিশকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। একটিও উত্তরপত্র আমরা পাইনি। বিষয়টি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাব।”

Advertisement

খবর পেয়ে কান্দি থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ঘটনাস্থলে যান কান্দির বিডিও সুরজিৎ রায়। সুরজিৎবাবু বলেন, “গণ টোকাটুকিতে বাধা দেওয়ায় ছাত্ররা কলেজের অধ্যক্ষ-সহ পাঁচ জনকে মারধর করেছে। কলেজের আসবাবপত্র চেয়ার-বেঞ্চ ভাঙচুর করেছে। ওই ঘটনায় প্রকৃত কারা দোষী তাদের চিহ্নিত করতে পুলিশকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।”

মুর্শিদাবাদ জেলার ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব অবশ্য এই অভব্যতাকে সমর্থন করেনি। জেলার ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি তথা কান্দি মহকুমা সংগঠনের সভাপতি জয়দেব ঘটক বলেন, “ছাত্র পরিষদ কখনওই শিক্ষাকেন্দ্রে ভাঙচুর করাকে সমর্থন করে না। এ দিনের এই বিশৃঙ্খলার জন্য ছাত্ররাই দায়ী। আমরাও চাই দোষীদের শাস্তি হোক।”

কলেজে ছাত্র তাণ্ডব। টেবিল চেয়ার থেকে সিলিং ফ্যান ভাঙচুরে বাদ পড়েনি কিছুই। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement