রানাঘাটের রাস্তায় হাইমাস্ট আলো। আর তা নিয়ে ফের বিতর্ক রাজনৈতিক মহলে।
রানাঘাট রেল স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মের জিআরপি গেট থেকে বেরিয়েই বাঁদিকে জিএনপিসি রোডে চোখে পড়বে উঁচু লম্বা টাওয়ার। সেখানে উজ্জ্বল সাদা আলোর বলয়। তবে এত উঁচুতে যে সে দিকে তাকাতে বেশ কষ্ট করতে হয়, বলাবলি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাস্তায় অবশ্য পিছলে পড়ছে সাদা আলো। আর আশপাশের গাছগুলো অদ্ভুত উজ্জ্বল হয়ে উঠছে রাতের বেলায়।
এমন আলো লাগানো হয়েছে দক্ষিনপাড়া, ছোটবাজারমোড়, দে-চৌধুরীপাড়া, কোর্টপাড়া এবং পূর্বপাড়ের নাসড়ায়। একসময় রানাঘাটের এ সব রাস্তায় জ্বলত কেরসিনের বাতি। রাতের অন্ধকারে অনেক সময়ই বিপদে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর অবশ্য পরিবর্তনের অনেক প্রকার ভেদ দেখেছেন তাঁরা। বাল্ব, টিউব থেকে ভেপার ল্যাম্প সবই এসেছে একে একে। রাজ্য রাজনীতিতে যখন ত্রিফলা আলোর বিতর্ক খানিকটা থিতিয়ে এসেছে ঠিক সে সময়ই রানাঘাটের রাস্তায় বসানো হয়েছে হাইমাস্ট আলো।
একটি পোস্টে দু’টি করে আলো জ্বলছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে শহরের ছ’টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এই অত্যাধুনিক আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা। রানাঘাট পুরসভার পুরপ্রধান তথা তৃণমূল বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আপাতত ছ’টি জায়গায় এই আলো বসানো হলেও আগামী দিনে আরও বেশ কিছু জায়গায় এই আলোর ব্যবস্থা করবেন তাঁরা। এ সব কিছুই শহরের সৌন্দর্যায়নের কথা মাথায় রেখে।
কিন্তু পুরভোটের আগে এর মধ্যে রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন বিরোধীরা। রানাঘাট পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলার কজ্জল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। এই এলাকার রাস্তাঘাট এত বড় নয় যে এখানে হাইমাস্ট আলো বসাতে হবে।” উজ্জ্বলবাবুর অভিযোগ শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানীয় জল, রাস্তা এমনকী রাস্তার আলো নিয়েই হাজারও সমস্যা রয়েছে। সে গুলো সমাধান করা অনেক বেশি জরুরি ছিল। তিনি স্পষ্ট বলেন, “এ হল ভোটের আগে কিছু মানুষের বাহবা কুড়োনোর উপায়।” সিপিএম লোকাল কমিটির সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “আমরা শহরের সৌন্দর্যায়নের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু, শহরে সর্বত্র এখনও ঠিকমতো উন্নয়ন হয়নি। সারা বছর কোনও উন্নয়ন হয় না। নির্বাচনের আগে রাস্তা মেরামতের কথা মনে পড়ে।”
৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ময়না বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই আলো সময়পোযোগী হয়নি। এতে কিছু মানুষের ভাল হলেও সবার উপকারে ওই আলো আসেনি।”