এই গ্রামে মায়ের পুজোর আগেই শুরু হয়ে যায় মেয়ের পুজোর প্রস্তুতি। এই গ্রামের মানুষ অনায়াসেই বলতে পারেন, “উমার থেকে এখানে লক্ষ্মীর কদরই বেশি গো।” এই গ্রামে লক্ষ্মীপুজো মানেই ফুটবল। তেহট্টের ওই গ্রামের নাম নতিপোতা।
ওই গ্রামের পারিজাত ক্লাব মঙ্গলবার লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে একদিনের ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। এ বার ওই খেলা ৩৭ বছরে পা রাখল। ওই প্রতিযোগিতায় হাওড়া, হুগলি, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের মোট আটটি দল যোগ দিয়েছিল। দিনভর খেলার পর ফাইনালে মুর্শিদাবাদ তরুণ সঙ্ঘ চাকদহ যুব সঙ্ঘকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ও নগদ ১৫ হাজার টাকা জিতে নেন। পারিজাত ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “আমরা সারা বছর এই দিনটার জন্য অপেক্ষায় থাকি। পাড়ার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, মেয়েজামাই সকলেই হাজির হয়েছেন। লক্ষ্মীপুজোর পাশাপাশি এই ফুটবল খেলাকে ঘিরেও থাকে এলাকার মানুষের উন্মাদনা।”
অন্য দিকে করিমপুর ক্রীড়া সংস্থার পরিচালনায় লিগের খেলাও চলছে জোরকদমে। চলতি মরসুমের জুন মাসে শুরু হয়েছে ওই ফুটবল লিগ। তবে ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে জুনিয়র, সিনিয়র দ্বিতীয় ডিভিসনের খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে সিনিয়র প্রথম ডিভিসনের খেলা। ১৭ জুলাই ২০ টি দলকে নিয়ে শুরু হয়েছিল জুনিয়র ফুটবল লিগ। পাঁচটি গ্রুপে ভাগ করে ওই লিগের খেলা শেষ হয় গত ৮ সেপ্টেম্বর। জুনিয়র লিগে ওই মরসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পূর্ব দোগাছি নবজাতক সঙ্ঘ ও রানার্স হয় মহিষবাথান বিবাদি ক্লাব।
২১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া সিনিয়র দ্বিতীয় ডিভিসনের খেলা শেষ হয়েছে ২৭ অগস্ট। সিনিয়র দ্বিতীয় ডিভিসন লিগে চ্যাম্পিয়ন হয় ধোড়াদহ সেবা সঙ্ঘ। আর রানার্স হয়েছে টোপলা নতুনপাড়া তরুণ সঙ্ঘ।১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সিনিয়র প্রথম ডিভিশনের খেলা। মোট আটটি দল ওই খেলায় যোগ দিয়েছে। ওই আটটি দল হল করিমপুর জামতলা নবারুণ সঙ্ঘ, শিশা নেতাজি ক্লাব, যমশেরপুর ক্রিকেট ক্লাব, কেচুয়াডাঙা ক্লাব, নতিডাঙা তরুণ সঙ্ঘ, পল্লিশ্রী সঙ্ঘ, ও দিঘলকান্দি কিশোর সঙ্ঘ। এখনও পর্যন্ত সিনিয়র প্রথম ডিভিশনে প্রতি দল দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। দিঘলকান্দি কিশোর সঙ্ঘ ৬ পয়েন্ট পেয়ে এখনও পর্যন্ত শীর্ষে রয়েছে। ওই লিগের এই মরসুমের শেষ ম্যাচ আগামী ৩১ অক্টোবর হবে বলে ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে।
লিগ ফুটবলের পাশাপাশি তেহট্ট মহকুমা জুড়ে চলছে একের পর এক একদিনের ফুটবল টুর্নামেন্ট। করিমপুর আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সুজিত বিশ্বাস বলেন, “আগে মাঠে প্রচুর দর্শক হলেও মাঝের কয়েকটা বছর দর্শকের উপস্থিতি কমে গিয়েছিল। কিন্তু গত দুই বছর থেকে এলাকার মানুষের আবার খেলার উপর ঝোঁক বেড়েছে। এখন সকলেই তাকিয়ে থাকেন ফুটবলের এই মরসুমের দিকে।”