বিপত্তি বহরমপুর শহরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
মাস দু’য়েক আগে চালু পানীয় জল সরবরাহের পাইপ ফেটে বুধবার সাত-সকালে চরম বিপত্তি ঘটল বহরমপুর শহরের গোরাবাজার এলাকার নিমতলা মোড়ে। দেড় ফুট ব্যাসার্ধের ওই পাইপ ফেটে যাওয়ায় প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত প্রবল বেগে জলের ফোয়ারা উঠতে থাকে। সেই ফোয়ারার সঙ্গে ইট-পাথরও প্রবল বেগে ছিটকে পড়ে। ফলে নিমতলার ওই পাঁচ মাথার মোড়ে আধ ঘণ্টা ধরে যানবাহন থেকে শুরু করে পথচারীসকলের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে গোরাবাজার শ্মশানঘাট লাগোয়া ৮০ ফুট উচ্চতার জলাধার থেকে জল ছাড়া বন্ধ করলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়।
জলাধার থেকে জল ছাড়া বন্ধ করায় জল বেরনোর বিপত্তি সামাল দেওয়া গেলেও তৈরি হয়েছে নতুন বিপত্তি। গোরাবাজার শ্মশানঘাট জলাধার থেকে জল ছাড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরের ৬টি ওয়ার্ডের ৩৫০০ বাড়িতে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সংস্কারের কাজ শেষ করে ফের জল সরবরাহ করতে আজ বৃহস্পতিবারের বিকাল গড়িয়ে যাবে বলে জানান বহরমপুর পুরসভার উপ-পুরপ্রধান মৈনুদ্দিন চৌধুরী বাবলা।
বহরমপুর শহরের উত্তর প্রান্তে কুঞ্জঘাটা এলাকায় রয়েছে জল বিশুদ্ধকরণ প্রকল্প। ভাগীরথী নদীর জল তুলে কুঞ্জঘাটার ওই প্রকল্পে জল পরিশুদ্ধ করা হয়। তারপর আর্সেনিক দূষণমুক্ত সেই বিশুদ্ধ পানীয় জল শহরের ৪টি জলধারে মজুত করা হয়। ওই ৪টি জলাধার রয়েছে গ্রান্টহল মোড়ে, নতুনবাজারে, মধুপুরে ও গোরাবাজার শ্মশানঘাট এলাকায়। এই প্রকল্প শুরু হয়েছে মাস দু’য়েক আগে। এত অল্প সময়েই পাইপ ফেটে যাওয়া নিয়ে তাই বিতর্ক শুরু হয়েছে শহরে। পাম্প অপারেটর অংশুমান ভট্টাচার্য বলেন, “ওই এলাকায় পোঁতা রয়েছে টেলিফোনের মোটা লাইন। তার ফলে জলের লাইন আড়াই ফুটের বেশি নীচ দিয়ে পোঁঁতা সম্ভব হয়নি। ভারী যানবাহন যাতায়াত করায় কংক্রিট ঢালাই করা জল সরবরাহের পাইপ ফেটে গিয়েছে।” উপ-পুরপ্রধানের আবার ব্যাখ্যা, “জলের তীব্র গতিবেগের কারণে দু’টি পাইপের সংযোগ স্থলের জয়েন্ট খুলে গিয়েছে।” পাম্প অপারেটর অংশুমান ভট্টাচার্য জানান, গোরাবাজারের মেছুয়া বাজারের কাছে জলের পাইপ লাইনেও ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে সেটি তেমন বড়সড় ফাটল নয়। ওই দু’টি এলাকার পাইপের মেরামতির পর বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে ফের জল সরবরাহ শুরু করা হবে।”
ততক্ষণ ভোগান্তি চলবে গৃহস্থের।