পঞ্চায়েতে মেয়ের বিরুদ্ধে বাবা

মেয়ে সময় দেয়নি বাবাকে। সেই অভিযোগ তালা ঝুলল পঞ্চায়েতে। মেয়ে কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধান। বাবা বিরোধী তৃণমূলের নেতা। এলাকা উন্নয়নের দাবি জানিয়ে বাবা নিজেই তালা ঝুলিয়ে দিলেন পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। মঙ্গলবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল কান্দির মহালন্দি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত। এ ঘটনায় অবশ্য অস্বাভাবিক কিছুই দেখছেন না বাবা, অথবা মেয়ে। এমনকী তাঁদের দু’জনেরই সাফ কথা, ‘এটা রাজনীতি। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কোনও যোগ নেই।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কান্দি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:২০
Share:

মেয়ে সময় দেয়নি বাবাকে। সেই অভিযোগ তালা ঝুলল পঞ্চায়েতে।

Advertisement

মেয়ে কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধান। বাবা বিরোধী তৃণমূলের নেতা। এলাকা উন্নয়নের দাবি জানিয়ে বাবা নিজেই তালা ঝুলিয়ে দিলেন পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। মঙ্গলবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল কান্দির মহালন্দি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত।

এ ঘটনায় অবশ্য অস্বাভাবিক কিছুই দেখছেন না বাবা, অথবা মেয়ে। এমনকী তাঁদের দু’জনেরই সাফ কথা, ‘এটা রাজনীতি। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কোনও যোগ নেই।”

Advertisement

মহালন্দি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের প্রধান সায়েবা খাতুন। তাঁর বাবা জাকির হোসেন মহালন্দি-১ অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি। জাকির হোসেনের অভিযোগ, এলাকায় পানীয় জল, রাস্তা কোনও কিছুরই উন্নতি হয়নি গত কয়েক বছরে।

অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলেই তৃণমূল স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিল পঞ্চায়েত প্রধানকে। কিন্তু দীর্ঘদিন আবেদন করা সত্ত্বেও তাপ উত্তাপ নেই প্রধানের। তিনি বিরোধী দলকে সামান্য সময়ও দিতে চাইছেন না। দেওয়া যাচ্ছে না স্মারকলিপি।

তাই এ দিন সকাল ৯ টার আগেই পঞ্চায়েতে জড়ো হন তৃণমূল কর্মীরা। দফতর খোলার আগেই তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। নির্ধারিত সময় পঞ্চায়েত প্রধান এবং অন্যান্য সরকারি কর্মীরা দফতরে ঢুকতে গেলে তাঁদেরও বাধা দেওয়া হয়। বাধ্য হয়েই তাঁরা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

তৃণমূলের অভিযোগ সম্পর্কে সায়েবা খাতুন ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি বলেন, “স্মারকলিপি নেওয়ার সময় একজন পদাধিকারি সরকারি কর্মীর থাকা দরকার। তিনি ছিলেন না। তাই সময় দিতে পারিনি। এ টুকু বোঝা উচিত ছিল বিরোধীদের।” তবে বাবা সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, “বাবা রাজনীতি করেছেন। এতে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কে চিড় ধরবে না।” রাজনৈতিক বিরোধীতাকে শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “তা ছাড়া বাবা-মা যা করেন সন্তানের মঙ্গলের জন্যই করেন। বাবা আন্দোলন করলেন বলেই সরকারি কর্মী আসছেন পঞ্চায়েতে। ভালই তো হল। উন্নয়নও হবে।”

তৃণমূলের বিক্ষোভ চলার সময়ই খবর যায় বিডিও-র কাছে। প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা এসে আলোচনা করেন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে। স্থির হয় ১৮ সেপ্টেম্বর স্মারকলিপি দিতে পারবেন তাঁরা। এরপর বেলা ১২ টা নাগাদ তালা খুলে দেওয়া হয়, উঠে যায় বিক্ষোভ।

কান্দির বিডিও সুরজিৎ রায় বলেন, “ওই পঞ্চায়েতে পদাধিকারিক সরকারি কর্মীর অভাবে প্রধান স্মারকলিপি নেওয়ার দিন স্থির করতে পারছিলেন না। ১৮ সেপ্টেম্বর পদাধিকারিক সরকারি কর্মী ওই পঞ্চায়েতে হাজির থাকবেন।”

এ দিকে জাকির হোসেন বলেন, “বাধ্য হয়েই পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়েছি। প্রথমেই যদি প্রধান সময় দিতেন তাহলে এমন আন্দোলন করতে হত না আমাদের।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন