পরীক্ষা ‘স্পেশাল’ বাস আজ থেকে

মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনও রকম হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে দুই জেলার প্রশাসন। সোমবার সকাল থেকেই প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বেসরকারি সংগঠনও পথে নামছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে পরীক্ষা শুরুর আগে ও পরে বিভিন্ন রুটে একাধিক ‘পরীক্ষা স্পেশাল’ বাস চালু করা হয়েছে। শুধু তাই নয় নদিয়া জেলা প্রশাসন ও বাসমালিক সমিতির তরফে জানা গিয়েছে, যে সব স্কুলের কাছাকাছি কোনও বাস রুট নেই সেই সব রুট গুলিকে চিহ্নিত করে এক বা একাধিক বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৩
Share:

মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনও রকম হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে দুই জেলার প্রশাসন। সোমবার সকাল থেকেই প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বেসরকারি সংগঠনও পথে নামছে।

Advertisement

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে পরীক্ষা শুরুর আগে ও পরে বিভিন্ন রুটে একাধিক ‘পরীক্ষা স্পেশাল’ বাস চালু করা হয়েছে। শুধু তাই নয় নদিয়া জেলা প্রশাসন ও বাসমালিক সমিতির তরফে জানা গিয়েছে, যে সব স্কুলের কাছাকাছি কোনও বাস রুট নেই সেই সব রুট গুলিকে চিহ্নিত করে এক বা একাধিক বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মাধ্যমিকের জন্য বাস মালিক সমিতির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল নদিয়া জেলা প্রশাসন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে এবার শুধুমাত্র পরীক্ষার্থীদের জন্যই ‘স্পেশাল বাস’ চালু করা হবে। পরীক্ষা শুরু ও শেষের সময়ে কৃষ্ণনগরের বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে উপস্থিত থাকবেন কর্মকতারা। কোনও এলাকায় যদি বাস পাওয়া নিয়ে সমস্যা হয় তবে সে কথা সরাসরি তাঁদের জানানো যাবে।

Advertisement

বাস মালিক সমিতির সদস্যদের আশা অভিযোগ পেলেই তাঁরা পরীক্ষার্থদের জন্য দ্রুত বাসের ব্যবস্থা করতে পারবেন। এ জন্য একটি ফোন নম্বরও তাঁরা দিয়েছেন পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য (০৩৪৭২-২৫২৪১৪)। নদিয়া জেলার বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক শশাঙ্ক বিশ্বাস বলেন, “আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত। আশা করি কোনও সমস্যাই হবে না।”

নবদ্বীপ বা যে সব এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের নদী পার হতে হবে সেই সব এলাকায় নদীতে থাকবে স্পিড বোট। দুর্ঘটনা এড়াতে নদীতে ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার সিভিক ফোর্সের’ কর্মীরা থাকবেন। জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “পরীক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গে নিরাপত্তাকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

এ দিকে পরীক্ষা চলাকালীন বিদ্যুৎ সরবরাহে যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয় তার জন্য ‘কুইক রেসপন্স টিম’ তৈরি করা হয়েছে। কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হলেই ওই বিশেষ দল সেখানে গিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে। এছাড়াও জেলার প্রতিটি হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়ে একটি বিশেষ টিম তৈরি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তৈরি থাকবে একটি করে অ্যম্বুল্যান্সও।

প্রশাসনের সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের পাশে থাকতে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে কৃষ্ণনগর পুরসভা। শহরের প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের বসার জন্য শিবির তৈরি করে দেওয়া হবে। সেখানে থাকবে পানীয় জলের ব্যবস্থা। পুরসভার একটি নিজস্ব মেডিক্যাল টিম সর্বক্ষণের জন্য ওষুধ নিয়ে তৈরি থাকবে। কোথাও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁরা ছুটে যাবেন।

কৃষ্ণনগর পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের অসীম সাহা বলেন, “যানজট এড়াতে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে প্রযোজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” এছাড়াও ভ্যান রিকশা, টুকটুক বা অন্য ছাট গাড়ি যাতে পরীক্ষার্থীদের কোন ভাবে হয়রানি করতে না পারে তার জন্য সতর্ক নজরদারি করা হবে।

পরীক্ষার জন্য তৈরী পাশের জেলা মুর্শিদাবাদও। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিদর্শক পূরবী বিশ্বাস দে বলেন, “প্রতি ৫০ জন পরীক্ষার্থী পিছু দু’জন করে পরিদর্শক তো থাকছেনই। সেই সঙ্গে স্পর্শকাতর কিছু পরীক্ষাকেন্দ্রকে চিহ্নিত করে বিশেষ ভিডিও রেকর্ডিং-এর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বহরমপুরের মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রের চারদিকে ১৪৪ ধারা বজায় থাকবে। বিডিও-দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৈরি থাকতে।” বহরমপুর থেকে ডোমকল, কান্দি, প্রভৃতি দিকে যাবে স্পেশাল বাস। পরীক্ষার্থীদের বিশেষ সহায়তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে সতর্ক থাকতে বলেছে প্রশাসন।

শুধু বাস পরিষেবা নয়, দুই জেলাতেই পরীক্ষার সময়ে যাতে যানজটে নাজেহাল না হতে হয়, সে দিকেও নজর রাখছে প্রশাসন। যানজট-প্রবণ এলাকা গুলিতে বিশেষ ভাবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই সব এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা হচ্ছে, জানাচ্ছে দুই জেলার প্রশাসন।

পরীক্ষায় বাড়ছে নজরদারিও। যে সব স্কুল রাস্তার ধারে অথবা রাস্তার দিকে খোলা জানলা রয়েছে সেই সব স্কুলগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী রাখা হবে, যাতে সহজে বাইরে থেকে নকল সরবরাহ করা না যায়। যে সব স্কুল চত্বরে প্রাচীর নেই সেই সব স্কুলে প্রয়োজনে বাঁশের ব্যরিকেড তৈরি করা হবে। চিহ্নিত করা হয়েছে সেই সব স্কুলগুলিকেও যাদের ইতিপূর্বে নকলের ইতিহাস রয়েছে। সেখানে প্রতিদিনই থাকবে ভিডিও ক্যামেরার ব্যবস্থা। বিশেষত অঙ্ক ও ইংরাজি পরীক্ষার দিন প্রত্যেকটি স্কুলেই ভিডিও ক্যমেরার ব্যবস্থা থাকবে।

বেলডাঙার ও সি অরূপ রায় জানান, গোটা জেলা জুড়েই বিশেষ পুলিশ বাহিনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষত নজর দেওয়া হচ্ছে ট্রাফিকের দিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন