ফের বোমাবাজি, অশান্তি অব্যাহত ইমামবাজারে

দফায় দফায় বোমাবাজিতে কেঁপে উঠল সুতির ইমামবাজার। সোমবার ফের কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষে কার্যত শ্মশান হয়ে যায় ওই এলাকা। এ দিনের বোমাবাজিতে ফুলমণি খাতুন নামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী গুরুতর জখম হয়। তাকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত হয়েছে তিন পথচারীও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অরঙ্গাবাদ শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫১
Share:

সংঘর্ষের পর পুলিশি টহল।—নিজস্ব চিত্র।

দফায় দফায় বোমাবাজিতে কেঁপে উঠল সুতির ইমামবাজার। সোমবার ফের কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষে কার্যত শ্মশান হয়ে যায় ওই এলাকা। এ দিনের বোমাবাজিতে ফুলমণি খাতুন নামে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী গুরুতর জখম হয়। তাকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত হয়েছে তিন পথচারীও।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে রবিবারই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইমামবাজার। সোমবারও তা চরমে ওঠে। ঘটনার জেরে বন্ধ হয়ে যায় স্থানীয় দোকানপাট। শুনশান রাস্তাঘাটে দেখা মেলেনি কোনও যানবাহনেরও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে এক বিড়ির গুদাম থেকে ১০ কেজির মতো বোমার মশলা উদ্ধার করা হয়েছে। গুদামটি সুতি-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাসের বলে পুলিশের দাবি। পরে গুদামটি সিল করে দেওয়া হয়। পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। ওই এলাকায় তল্লাশি জারি রয়েছে।” ওই ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ওবাইদুর রহমানের দাবি, “ওই কংগ্রেস নেতার উস্কানিতেই যত অশান্তি হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দিয়ে সেখানে বোমা বানানো হচ্ছিল।”

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আলফাজুদ্দিন। তিনি বলেন, “আমাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। এলাকায় অশান্তি চলায় কয়েকজন নিরীহ কংগ্রেস সমর্থক রবিবার এক রাতের জন্য আমার ওই ফাঁকা গুদামে আশ্রয় নেন। পরদিন সকালে তাঁরা চলে যান। এখন শুনছি তারপর নাকি পুলিশ গুদামের তালা ভেঙে বারুদ উদ্ধার করেছে। আমার বিরুদ্ধে মামলাও নাকি দায়ের করা হয়েছে।”

Advertisement

এ দিকে, দিনের পর দিন সংঘর্ষের জেরে আতান্তরে পড়েছেন ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ। আতঙ্কে ঘর থেকে বেরোতে পারছেন না কেউ। অশান্তির আশঙ্কায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় স্কুল। কিন্তু চলতি মাসের ২৩ তারিখে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। অনেক পরীক্ষার্থী এখনও অ্যাডমিট হাতে পায়নি। তার উপর এলাকায় সংঘর্ষ চলায় আদৌ তারা পরীক্ষা দিতে পারবে কি না তা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা জাহেরা বিবি বলেন, “কিছু মানুষ গোলমাল পাকাচ্ছে। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের।” তাঁর কথায়, “বাড়িতে খাওয়ার মতো কিছু নেই। চাল, ডাল যে কিনতে যাব সে ভরসা পারছি না। দোকানপাটও বন্ধ।”

আরও এক গ্রামবাসী কাজেম মহলদার বলেন, “বয়স ষাট পেরিয়েছে। কিন্তু গ্রামে এত অশান্তি কখনও দেখিনি।” এ দিকে, অরঙ্গাবাদের যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রামের বিরোধ মেটাতে ১৮ ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় শান্তি বৈঠক ডেকেছিল, দিনের পর দিন সংঘর্ষে কার্যত হতাশ হয়ে তারাও তা বাতিল করে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন