বৃদ্ধকে বোকা বানিয়ে প্রায় দশ হাজার টাকা ছিনতাই করল এক যুবক। সোমবার কান্দি মহকুমা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্ক থেকে পেনশনের টাকা তুলেছিলেন কান্দি থানার কয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক সুধীর পাল। তাঁর অভিযোগ, ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে ভ্যান রিকশায় ওঠার সময় পিছন থেকে এক যুবক বলে উঠে ‘ও দাদু আপনার টাকা পড়ে গিয়েছে।’ সুধীরবাবু বলেন, “টাকা পড়ে গিয়েছে শুনে নীচের দিকে তাকিয়ে দেখি কয়েকটি দশ টাকার নোট মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। ভাবলাম সত্যিই আমার টাকা, হয়ত রিক্শায় ওঠার সময় পড়ে গিয়ে থাকবে। যেই টাকা তুলতে নীচে ঝুঁকেছি অমনি ভ্যান রিকশায় রাখা ব্যাগটা তুলে চম্পট দেয় এক যুবক।” ওই ব্যাগে ছিল সদ্য ব্যাঙ্ক থেকে তোলা পেনশনের ৯৮০০ টাকা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই যুবক পগারপার। সুধীরবাবু বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এখান থেকে টাকা তুলে বাড়ি ফিরছি। কোনও দিন এমন হয়নি। আমার সারা মাসের সম্বলটুকু নিয়ে গেল।”
‘‘টাকা পড়ে গেছে” বলে লোক ঠকানোর পদ্ধতি নতুন নয়। খাস কলকাতার বাজারেও এমন রসিকতা করে থাকেন হকাররা। কান্দির মতো ছোট শহরেও এমন ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। তবে চুরি, ছিনতাই যে প্রতিদিন বেড়েই চলেছে, সে কথা স্বীকার করছেন সকলে। বিশেষত কান্দি মহকুমা হাসপাতাল এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই জানালেন, কেউ হয়ত সাইকেল দাঁড় করিয়ে ব্যাঙ্কে ঢুকেছিলেন, ফিরে এসে দেখলেন সাইকেল নেই। শুধু সাইকেল নয় মোটর বাইক দাঁড় করিয়ে হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়ে মোটর বাইক চুরি গিয়েছে, এমন দৃষ্টান্তও বিরল নয়। এলাকাবাসীর ক্ষোভ পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলে থানা থেকে বলা হয়, “আমাদের কী করার আছে।” দিনের পর দিন চুরির ঘটনা ঘটে চলেছে, তবু পুলিশের কোনও হেলদোল নেই। কান্দির পুরপ্রধান কংগ্রেসের গৌতম রায় বলেন, “কান্দি শহরে প্রায়ই দিনের বেলায় চুরির ঘটনা ঘটে। আমরা বহুবার পুলিশকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছেনা।”
এ দিকে পুলিশের একাংশের দাবি, শহরে চুরির সঙ্গে জড়িতরা স্থানীয় নয়। নদিয়া সীমান্ত পেরিয়ে সালার হয়ে কান্দিতে ঢুকে লুঠপাট চালায় একদল দুষ্কৃতী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকাশ্য দিবালোকে চুরির করছে কারা তা নিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে একটি দলকে চিহ্নিতও করা হয়েছে। শহরে কড়া নজরদারি চলছে। কান্দি থানার আইসি কৌশিক ঘোষ বলেন, “ওই দলকে ধরার জন্য শহরে ও শহরের বাইরে সাদা পোশাকে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। শীঘ্রই ওই দলটিকে আমরা ধরে ফেলতে পারব বলেই মনে করছি।”