বিদ্যুতের দাবিতে ক্ষোভ শিকারপুরে

এ যেন ঠিক প্রদীপের নীচেই অন্ধকার। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে একটি গ্রামে এখনও পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ পরিষেবা। তাই নিয়েই ক্ষুব্ধ শিকারপুর গ্রামের বাসিন্দারা। শিকারপুর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। অথচ শিকারপুরে এখনও জ্বলেনি আলো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফরাক্কা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৪
Share:

এ যেন ঠিক প্রদীপের নীচেই অন্ধকার। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে একটি গ্রামে এখনও পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ পরিষেবা। তাই নিয়েই ক্ষুব্ধ শিকারপুর গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

শিকারপুর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। অথচ শিকারপুরে এখনও জ্বলেনি আলো।

বছর চারেক আগে ওই গ্রামে খুঁটি বসেছে। বিদ্যুৎবাহী তার ঝুলেছে বহুদিন। নেই শুধু বিদ্যুৎ সংযোগ।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আশপাশের সব গ্রামে বিদ্যুৎ এলেও শিকারপু্র এখনও সেই তিমিরে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের বাস ফরাক্কার ওই গ্রামে। বিদ্যুতের অভাবে বিনোদন দূরে থাক নিত্যদিনের প্রাথমিক প্রয়োজনটুকু থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক মোস্তাক শেখ বলেন, “এমনিতেই আমাদের গ্রাম শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবেতেই পিছিয়ে পড়া। সরকারি পরিষেবা বলতে কিছুই নেই। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় আরও যেন কয়েক কদম পিছিয়ে পড়েছে গ্রাম।”

তিনি জানান, গ্রামে প্রায় ৪০০ প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রী রয়েছে। ৩টি আইসিডিএস কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু একটা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রও নেই। কাছাকাছি স্বাস্থ্য কেন্দ্র বলতে ১২ মাইল দূরে ফরাক্কার বেনিয়াগ্রাম।

তবে শুধু বিদ্যুৎ নয় বঞ্চনার তালিকাটা যে বেশ দীঘর্, জানালেন গ্রামবাসীরা। এখনও পর্যন্ত কোনও স্বাস্থ্য, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হয়নি ওই গ্রামে। নেই কোনও যানবাহনের পরিষেবাও। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নেই। বেওয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই গ্রামের তিন দিকেই ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত। অন্য দিকে, নদী। নদী পেরোতে গেলে জন প্রতি নৌকা ভাড়া ১০ টাকা। তাই রাজ্যের বাসিন্দা হয়েও রাজ্যের কোনও গ্রামে যেতে গেলে পেরোতে হয় ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত।

পেশায় চিকিৎসক ফিরোজ আলম বলেন, “গ্রামে বিদ্যুৎচালিত ধান ভাঙানো বা গম পেষার কল নেই। বহুবার প্রশাসনিক কর্তাদের সমস্যার সমাধানের জন্য জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।” তিনি জানান, মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিৎসকদের দেখা মেলে না। ভরসা সেই ঝাড়খণ্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

স্থানীয় টিটু শেখের কথায়, “ঝাড়খণ্ড প্রশাসনের কথায় শিকারপুর পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম। তাই গ্রামের দোরগোড়ায় এসে থমকে যায় সড়ক নির্মাণের কাজ। আর এ রাজ্যের প্রশাসন শিকারপুরের কোনও খবরই রাখে না। এই উপেক্ষার প্রতিবাদে আমরা বয়কটের পথে নেমেছি।”

ফরাক্কা বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগের সহকারি বাস্তুকার সুমনকুমার মাঝি বলেন, “গ্রামের একটা অংশে খুঁটি পোঁতা বা ও তার টাঙানো হলেও ভৌগলিক কারণে ওই গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছাচ্ছে না।” তিনি জানান, ওই গ্রামে বিদ্যুতের উচ্চ পরিবাহী তার নিয়ে যেতে হলে ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সরকারি পর্যায়ে দু’রাজ্যের কোনও আলোচনা না হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না। ফরাক্কার বিডিও সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তবে ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ কবে পৌঁছবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।”

আসন্ন বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপ-নির্বাচনে বিজেপি ভাল ফল করবে বলে আশাবাদী দলের রাজ্য কমিটির সদস্য এবং প্রাক্তন ফুটবলার ষষ্ঠী দুলে। তিনি বলেন, “আমি নিজে ওই সব এলাকায় প্রচারে যাব। রাজ্যের ৮০ শতাংশ মানুষ আজ তৃণমূলের বিপক্ষে। সুযোগ পেলেই তাঁরা তৃণমূলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।” শুক্রবার চাকদহ শিমুরালির এলাকায় একটি ক্লাবের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় এসে এই মন্তব্য করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন