বিভেদ ভুলে ভাষা দিবসে মিলল সালার

ভাষা-শহিদ আবুল বরকতের গ্রাম বাবলাতে তো বটেই, সারা মুর্শিদাবাদ জেলাই মেতে উঠেছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাকশাহির গুলিতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ-র ছাত্র আবুল বরকত আদতে মুর্শিদাবাদের ভূমিপুত্র। সালারের ওই গ্রামের নাম বাবলা। ওই গ্রামে বরকতের জন্মভিটেয় ভাষা শহিদদের স্মরণে অনুষ্ঠান করা নিয়ে কংগ্রেস এবং সিপিএমের মধ্যে কাজিয়া প্রায় দেড় দশকের পুরনো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪৯
Share:

ভাষা-শহিদ আবুল বরকতের গ্রাম বাবলাতে তো বটেই, সারা মুর্শিদাবাদ জেলাই মেতে উঠেছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনে।

Advertisement

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাকশাহির গুলিতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ-র ছাত্র আবুল বরকত আদতে মুর্শিদাবাদের ভূমিপুত্র। সালারের ওই গ্রামের নাম বাবলা। ওই গ্রামে বরকতের জন্মভিটেয় ভাষা শহিদদের স্মরণে অনুষ্ঠান করা নিয়ে কংগ্রেস এবং সিপিএমের মধ্যে কাজিয়া প্রায় দেড় দশকের পুরনো। এত দিন ১০০ গজের তফাতে পৃথক দু’টি মঞ্চ গড়ে সিপিএম এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একই সময়ে পৃথক দু’টি স্মরণ অনুষ্ঠান হত। যদিও সেখানে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর থেকে যুযুধান দু’পক্ষের ক্ষমতা জাহির করাটাই ছিল মুখ্য। সেই পুরনো কাজিয়ায় অবশেষে দাঁড়ি পড়ল। দু’পক্ষই এ বার বিবাদ ভুলে মিলিত ভাবে গত বৃহস্পতিবার বরকতের জন্মভিটেয় ভাষা দিবস পালন করতে শুরু করেছেন। অনুষ্ঠান চলবে আগামি রবিবার পর্যন্ত।

দু’পক্ষের বিবাদ এবং সন্ধির নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ক্ষমতার পালা বদল। এমনটাই মত জেলার রাজনৈতিক মহলের একাংশের। এত দিন কেন্দ্রের ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস আর রাজ্যের ক্ষমতায় সিপিএম। ক্ষমতার দম্ভে কোনও পক্ষই এত দিন একযোগে ভাষা দিবস উদ্যাপন করেনি। কিন্তু বর্তমানে দু’পক্ষই ক্ষমতার গদি থেকে অপসারিত। এবং দু’পক্ষেরই ‘কমন’ প্রতিপক্ষ বিজেপি এবং তৃণমূল। পরিবর্তিত এই রাজনৈতিক সমীকরণের ফলে দু’পক্ষই এ বার এক সঙ্গে ভাষাদিবস পালন করছে। বহরমপুর শহরেও আজ শনিবার ভোর থেকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থা ভাষা দিবস উদ্যাপন করছে। সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক, বাচিক শিল্প, ক্ষুদ্র পত্রপত্রিকা-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থা মিলিত ভাবে শহরে গঠন করেছে ‘কৃষ্টিপথ’ নামে একটি যৌথ সংস্থা। সংস্থার উদ্যোগে এ দিন প্রথম ভাষা দিবস উদ্যাপন হবে আজ ভোরে বহরমপুর রবীন্দ্রসদন থেকে প্রভাতফেরির মাধ্যমে।

Advertisement

বিকেলে রবীন্দ্রসদনের মুক্তমঞ্চে ‘কৃষ্টিপথ’-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে কবিতা, গান-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ দিন বহরমপুর শহরে পৃথক তিনটি জায়গায় ভাষাদিবস পালন করবে গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘের মুর্শিদাবাদ শাখা, ‘বাচিক শিল্পচর্চার মুক্ত দিগন্ত’ ও ‘রূপকথা’। ‘কৃষ্টিপথ’ জন্মের আগেই সংস্থা ৩টি পৃথক ভাবে ভাষাদিবস উদ্যাপনের কর্মসূচি নিয়েছিল। তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠান শেষে তাঁরাও যোগ দেবেন রবীন্দ্রসদনের মুক্তমঞ্চে ‘কৃষ্টিপথ’ আয়োজিত ভাষা অনুষ্ঠানে। এ দিন ভোরে ফরাক্কার এনটিপিসি-র নবারুণ মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রভাতফেরি শেষ হবে জাফরগঞ্জ গ্রামে। তার পর ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন কমিটি’-র উদ্যোগে আবৃত্তি, গান, নাটক, গীতি আলেখ্যে অনুষ্ঠিত হবে ভাষাদিবসে। একই ভাবে কান্দি, খড়গ্রাম, বেলডাঙা, রঘুনাথগঞ্জ ও লালগোলা-সহ মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন এলাকায় আজ পালন করা হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

দুর্নীতির অভিযোগ। একশো দিনের কাজের টাকা বাড়ি থেকে বিলি করার অভিযোগ উঠল বেলডাঙার চৈতন্যপুর-২ পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান কংগ্রেসের অসীম মণ্ডলের বিরুদ্ধে। ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সাইনুদ্দিন শেখ জানান, ওই টাকা বাড়ি থেকে বিলি হচ্ছিল যাতে টাকার খানিকটা উপ-প্রধান পেতে পারেন। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে বলে দাবি তাঁর। যদিও ওই উপ-প্রধানের দাবি, একশো দিনের কাজের টাকা যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার কথা সেই ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে জায়গা না থাকায় ওই কাজে যুক্ত কর্মীদের বসার ব্যবস্থা তাঁর বাড়িতে করার কথা হচ্ছিল। তিনি রাজি না হওয়ায় তা আর হয়নি। বেলডাঙা-১ ব্লকের বিডিও শুভ্রাংশু মণ্ডল জানান, একশো দিনের কাজের টাকা শ্রমিকদের হাতে দেওয়া হয় না। ব্যাঙ্কে তা সরাসরি জমা পড়ে। তবে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন