ডিওয়াইএফআই-এর নীতিতে আস্থা রাখল এসএফআইও। জেলা সম্মেলনে নেতৃত্বে তুলে আনা হল একগুচ্ছ নতুন মুখ। ৮ ও ১৯ অক্টোবর শান্তিপুরের ফুলিয়াতে জেলা সম্মেলনে জেলা কমিটি থেকে শুরু করে সম্পাদকমণ্ডলী সর্বত্রই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একাধিক নতুন মুখ দেখা যাবে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনে। সংগঠনের এক জেলা নেতৃত্ব যাদেরকে ‘তরুণ তুর্কির’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার থেকে সরে যাওয়ার পরে আমাদের সংগঠন একটা বড় ধাক্কা খেয়েছিল। এখনও কলেজে আমাদের ছেলেরা ঢুকতে পারছে না। মেরে বের করে দিচ্ছে তৃণমূল।” তিনি আরও বলেন, “কিন্তু তারই মধ্যে আবার সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে অনেক কলেজেই যাঁরা মেরুদণ্ড সোজা করে সামনে থেকে সংগঠনটা করছেন সেই তরুণ তুর্কিদের এবার জেলার নেতৃত্বে তুলে আনা হয়েছে।”
সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার সম্পাদকমণ্ডলীর ১৭ জনের মধ্যে ৯ জনই নতুন মুখ। আবার জেলা কমিটির ৫২ জনের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশই নতুন। শুধু তাই নয় ১১ জন পদাধিকারীর মধ্যে ৮ জনই নতুন। বয়সের কারণে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সংগঠনের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা কৌশিক দত্তকে। নতুন সভাপতি হয়েছেন রাজীব দাস। তবে সম্পাদক পদে থেকে গিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলি বিশ্বাস।
লোকসভা ভোটের পরে সিপিএমের জেলা কমিটির বৈঠকে সূর্যকান্ত মিশ্রের উপস্থিতিতে দাবি উঠেছিল নিষ্ক্রিয় নেতৃত্বকে সরিয়ে যাঁরা বিভিন্ন এলাকায় মেরুদণ্ড সোজা করে রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছেন তাঁদেরকে নেতৃত্বে তুলে আনার। আবার সম্প্রতি ডিওয়াইএফআই-এর জেলা সম্মেলনেও সেই সংগঠনের নেতৃত্বেও একাধিক নতুন মুখ তুলে আনা হয়েছে। এ বার সেই ধারা বজায় রেখে ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়েও নতুন মুখ তুলে আনা হল বলেই সংগঠনের দাবি।
জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “আমরা ক্ষমতায় থাকার সময় ছাত্র সংসদ কেন্দ্রিক সংগঠন করতে শুরু করেছিলাম। তার কুপ্রভাব আমরা ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর থেকেই হাড়ে হাড়ে টের পেতে শুরু করি। কলেজগুলিতে তাসের ঘরের মতো সংগঠন ধসে পড়ে। কিন্তু প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে আমরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছি। অনেক নতুন ছেলে উঠে আসছে।”
সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রতিনিধিরা বারবার তৃণমূলের সন্ত্রাসের কথাই তুলে ধরেন। তাঁদের কথায়, “কলেজেই ঢুকতে দিচ্ছে না। মেরে তাড়িয়ে দিচ্ছে।” কলেজেই যেখানে ঢোকা যাচ্ছে না সেখানে সংগঠন চালাবেন কী করে সেই প্রশ্নের উত্তরে সম্পাদক মণ্ডলীর ওই সদস্য বলেন, “ঠিক হয়েছে কলেজের বাইরে ,পাড়ায় পাড়ায়, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা হবে। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আরও বেশি করে যোগাযোগ রাখা হবে।”
দলের যুব ও ছাত্র সংগঠন পারল। এবার কি সিপিএম সত্যিই তাদের ‘নিষ্ক্রিয়’ নেতৃত্বকে সরিয়ে ‘মেরুদণ্ড সোজা করে’ লড়াই করা নতুন মুখের ‘কমরেডদের’ নেতৃত্বে তুলে আনতে পারবে?