ব্যান্ডপার্টি নিয়েও জমল না তাপসের মিছিল

শুরুতেই হোঁচট। সোমবার ছিল কৃষ্ণনগর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী তাপস পালের প্রথম প্রচার-মিছিল। রণপা-ব্যান্ডপার্টি রাস্তায় নামিয়েও সে মিছিল জমল না। লোক ছিল মেরেকেটে গোটা পাঁচশো। ছিলেন না স্থানীয় সাতজন বিধায়কের একজনও। দু-একজন ছাড়া জেলার নেতারাও বিশেষ কেউ ছিলেন না।

Advertisement

মনিরুল শেখ

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০৩:১৩
Share:

কৃষ্ণনগরের সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে তৃণমূল প্রার্থী তাপস পাল। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

শুরুতেই হোঁচট।

Advertisement

সোমবার ছিল কৃষ্ণনগর লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী তাপস পালের প্রথম প্রচার-মিছিল। রণপা-ব্যান্ডপার্টি রাস্তায় নামিয়েও সে মিছিল জমল না। লোক ছিল মেরেকেটে গোটা পাঁচশো। ছিলেন না স্থানীয় সাতজন বিধায়কের একজনও। দু-একজন ছাড়া জেলার নেতারাও বিশেষ কেউ ছিলেন না।

নদিয়ার সদর শহর কৃষ্ণনগরের পোস্ট অফিসের মোড় থেকে তারকা প্রার্থীর সমর্থনে মিছিল বেরোয়। কালীবাড়ি, চার্চ, জোলের পাড়া জামা মসজিদ, কুর্চিপোতা মসজিদ হয়ে ফের পোস্ট অফিসে পৌঁছয়। তাপস পালের পাশে পাশে সারাক্ষণ ছিলেন কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান অসীম সাহা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন জানালেন, মাস চারেক আগে কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রচারপর্বে তৃণমূলের মিছিলে এর চেয়ে ভিড় হত বেশি।

Advertisement

তাপস পাল তারকা-প্রার্থী, এই এলাকারই সাংসদ ছিলেন। তা হলে মিছিলের এই দশা কেন? তৃণমূলের নদিয়া জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের কথায়, “আজকের মিছিলটা কৃষ্ণনগর শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তাই লোক একটু-আধটু কম হতেই পারে।” কালীবাড়ির কাছে গৌরীবাবু নিজে মাত্র মিনিট দশেকের জন্য মিছিলে ছিলেন। তার কারণ ব্যাখ্যা করতে দিয়ে জেলা সভাপতি বোঝান, “আমি মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মহম্মদ আলির সমর্থনে করিমপুরে প্রচারে এসেছি।” তবে গৌরীবাবুর বিশ্বাস, পরে ঠিক মিছিলে ভিড় বাড়বে।

যদিও তৃণমূলের অন্দরে কানাঘুষো, তাপসবাবুর হয়ে প্রচারে এ বার উৎসাহী নয় জেলার নেতাদের একাংশ। অনেকেই মুখে তাঁর প্রার্থীপদ নিয়ে অসন্তোষ না দেখালেও, প্রচারে না-গিয়ে প্রার্থীর সঙ্গে নিজের দূরত্ব বোঝাতে চাইছেন। তাই দলের তরফে প্রচারের সংগঠনে ফাঁক থেকে গিয়েছে। এ দিনের মিছিলের খবর দলেরই সর্বত্র পৌঁছয়নি বলে দাবি করছেন অনেক নেতা-কর্মী। তৃণমূলের জেলা স্তরের এক নেতা দাবি করেন, ‘‘তাপস সোমবার প্রচার শুরু করছেন, তা অন্য সূত্রে জানতে পারি। দলের তরফে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। তাই যেতে পারিনি।” পুরপ্রধান অসীম সাহাও জানান, তিনি গত কাল বিকেলের পরে জেনেছেন মিছিলের কথা। অসীমবাবু বলেন, “শেষবেলা জানতে পেরে যতটা সম্ভব কর্মীদের এনেছি।” তারই মধ্যে অত্যুৎসাহী কিছু কর্মীর ধাক্কায় ১৪ জন কাউন্সিলর মাঝপথে বাড়ি ফিরে যান বলে দলীয় সূত্রে খবর।

তাপস পাল নিজে অবশ্য খুশি। তাঁর কথায়, “শহরের মিছিল, তাই শহর নেতারা ছিলেন। প্রচুর লোক হয়েছে। বর্ণাঢ্য মিছিল। আমি খুশি।”

মিছিলে লোক তেমন না হলেও, জাঁকজমকের খামতি ছিল না। মিছিলের গোড়ায় হুগলির ব্যান্ডেল থেকে আসা ছ’জন শিল্পী তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সেঁটে রণ-পা পরে হাঁটছিলেন। তার পরই ছিল জলপাই রঙের পোশাক পরা শান্তিপুরের ব্যান্ড পার্টি। তাঁদের বাজনার তালে-তালে মিছিল এগোতে থাকে। এরই মাঝে মন্দিরে যেমন পুজো দিলেন রুপোলি পর্দার নায়ক, তেমনই চার্চে গিয়ে আর্শীবাদ নিলেন। আবার জামা মসজিদে চাদরও চড়ালেন নিজে। এই সময়ে পাড়ার মহিলারা তাপস পালকে চোখের দেখা দেখতে মসজিদের সামনে হুড়োহুড়ি বাঁধিয়ে দেন। বোঝা যায়, রাজনীতির আঙিনায় যা-ই হোক, মহিলা-মহলে ‘দাদা’র জনপ্রিয়তা এখনও অটুট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন