এ ভাবেই অনাদরে পড়ে থাকে মাঠ।—নিজস্ব চিত্র
রাষ্ট্রপতি এসেছিলেন ২৩ অগস্ট। সে জন্য হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছিল ডোমকলের খেলার মাঠে। আজও সে মাঠ সংস্কার করে ফিরিয়ে দেওয়া যায়নি নাগরিকদের হাতে। ডোমকল শহরের প্রাণকেন্দ্রের এই মাঠটি বাদ দিলে খেলার জন্য অবশিষ্ট বাজার লাগোয়া ডোমকল ভবতারণ স্কুলের ফুটবল মাঠ। সকাল বিকেল ডোমকলের মানুষের হাঁটাহাঁটি, শরীরচর্চা থেকে নানা ক্রীড়ানুষ্ঠানের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে এই স্কুলমাঠ। এমনকী গত একমাস ধরে মহিলা ক্রিকেটের প্রশিক্ষণও এখন হচ্ছে এই মাঠেই। ফলে চাপ বাড়ছে স্কুলের উপর।
গত সপ্তাহে ওই মাঠেই হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডোমকল চক্রের বাৎসরিক ক্রীড়ানুষ্ঠানের। তারপর মাঠের হাল খুবই খারাপ বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তিন-চার দিন পরও গোটা মাঠ জুড়ে পড়ে থেকেছে প্লাস্টিকের গ্লাস, কাগজের কাপ, ভাঙা হাঁড়ির টুকরো, কুচো কাগজ। তাছাড়া খুঁটি পোঁতার জন্য যে সব গর্ত করা হয়েছিল তা বন্ধ করতেও লেগেছে বেশ কিছুটা সময়। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এই স্কুলের মাঠে বছরের নানা সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সে সব অনুষ্ঠানের জাঁকজমকে বহু টাকা খরচ হয়। কিন্তু অনুষ্ঠানের পরে আর কেউ ফিরে তাকায় না মাঠের দিকে।
শুধু স্কুল কলেজের ক্রীড়া অনুষ্ঠান নয়। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল, ক্রিকেট লিগ মেয়েদের ক্রিকেট প্রশিক্ষণসব কিছুর ভরসা এই মাঠ। স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠ হেলিপ্যাডের জন্য খারাপ থাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রাতর্ভ্রমণ বা সান্ধ্য ভ্রমণের পথও। অনেকেই এই স্কুলের মাঠেই আসেন।
ভবতারণ হাইস্কুল লাগোয়া ক্লাব সেবা সঙ্ঘের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রাকেশ শেখ বলেন, ‘‘এই প্রথম নয়, প্রায় সব সংগঠনই মাঠ ব্যবহার করে দায় সারেন। আমরা কিছু বলতে গেলে আমাদের বলা হয় এটা স্কুলের মাঠ। যা বলার স্কুল বলবে, আপনারা বলার কে?’’ এ দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার সামন্ত বলেন, ‘‘মাঠ ব্যবহারের পরে সেটি পরিষ্কার করা নিজেদের দায়িত্ব। সেটা নিয়ে আবার আমাদের আলাদা করে বলতে হবে সেটা ভেবেই খারাপ লাগছে। কিন্তু এরপর থেকে মাঠ পরিষ্কারের বিষয়ে চুক্তি করিয়ে নেব।’’ ডোমকল চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বদিউজ্জামান বলেন, ‘‘মাঠ পরিষ্কার করার জন্য চার জনকে কাজে লাগানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কেন মাঠ পরিষ্কার করা হয়নি তা বুঝতে পারছি না।’’ বদিউজ্জামানের নির্দেশে গর্তগুলি বোজান হলেও অন্য কোনও কাজ মাঠে করা হয়নি সোমবার পর্যন্ত।