বর্ষায় নদীর জল বাড়তেই ভাঙন ফরাক্কার গ্রামে

বর্ষার জল বাড়তেই ফের ভাঙন শুরু হয়েছে ফরাক্কার কুলিদিয়ার এলাকায়। দু বছর আগে বাঁধানো স্পার ইতিমধ্যেই ধসে গিয়েছে সেখানে। এলাকার গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক আসিফ ইকবালের মতে, “এই ভাবে ভাঙনের প্রকোপ চলতে থাকলে ৪০ মিটার দূরে থাকা গ্রামের প্রায় দু’শো বাড়ি গঙ্গায় ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কুলিদিয়ার থেকে পারলালপুর ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মিটার এলাকা জুড়ে এই ভাঙন চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০১:১৬
Share:

বর্ষার জল বাড়তেই ফের ভাঙন শুরু হয়েছে ফরাক্কার কুলিদিয়ার এলাকায়।

Advertisement

দু বছর আগে বাঁধানো স্পার ইতিমধ্যেই ধসে গিয়েছে সেখানে। এলাকার গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক আসিফ ইকবালের মতে, “এই ভাবে ভাঙনের প্রকোপ চলতে থাকলে ৪০ মিটার দূরে থাকা গ্রামের প্রায় দু’শো বাড়ি গঙ্গায় ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কুলিদিয়ার থেকে পারলালপুর ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মিটার এলাকা জুড়ে এই ভাঙন চলছে। তিনি বলেন, “২০১২ সালে এই এলাকায় স্পার বাঁধানোর কাজ করেছিলেন ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জলের তোড়ে দু’বছরের মধ্যেই তা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতির কথা লিখিত ভাবে ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজারের অফিসে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি দেখতে কেউই আসেননি এলাকায়।”

ফরাক্কা ব্লকের মধ্যে পড়লেও কার্যত ওই গ্রামগুলি একটি জলবেষ্টিত দ্বীপ। তৃণমূলের ফরাক্কা ব্লকের সভাপতি লুৎফল হক বলেন, ‘‘বুধবার ওই ভাঙন কবলিত এলাকায় গিয়ে ভাঙনের যে রুদ্র রূপ দেখে এসেছি তাতে ভবিষ্যতে ওই গ্রামের আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে।” সুতির তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস বলেন, “বর্ষায় কুলিদিয়ার-সহ জঙ্গিপুর মহকুমা জুড়েই ভাঙন বেড়েছে। ফরাক্কা ব্যারাজের ডাউন ও আপার স্ট্রিমে ৮০ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন রোধের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সেচমন্ত্রক নিয়েছেন, কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। এমনকী বিএসএফ-এর সীমান্ত চৌকিও ভাঙনে বিপদগ্রস্ত অনেক স্থানে। বিষয়টি আজ, শুক্রবার নদিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে তোলার চেষ্টা করা হবে।”

Advertisement

কুলিদিয়ারে ভাঙন কবলিত গঙ্গা পাড় থেকে ৪০ মিটার দূরে নিজের ঘর বাড়ি বিপন্ন বৈকুণ্ঠ সরকারের। তিনি বলেন, “ভাঙন রোধের বিষয়ে কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই কাজ হচ্ছে। যেখানে সেখানে স্পার বাঁধা হচ্ছে। যেখানে ৪৫ কিলোগ্রামের ভারী পাথর ব্যবহার করার কথা। সেখানে কম ওজনের পাথর ব্যবহার করছেন ঠিকাদারেরা। তাদের কাজে সে ভাবে সরকারি নজরদারিও নেই। তার ফলেই দু’বছর আগের বাঁধানো স্পার জলের ধাক্কায় ভেঙে পড়েছে।” গ্রামের শিক্ষক মৈমুল ইসলাম বলেন, “ভাঙন পরিস্থিতি ক্রমশ যে ভাবে বাড়ছে তাতে কুলিদিয়ার, হোসেনপুর গ্রামগুলির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। কিন্তু এই সব গ্রামবাসীর পুনর্বাসনের কী হবে! কোথায় যাবে তারা তা নিয়েই চিন্তায় ঘুম কেড়েছে গ্রামবাসীদের।” ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার সৌমিত্র কুমার হালদার বলেন, “আমি বাইরে আছি। ওই এলাকার ভাঙন পরিস্থিতির কথা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ সব জানেন। কিন্তু এই মুহূর্তে সেখানে কাজ করার মতো অবস্থা নেই।”

ক্রমাগত পাড় ভাঙছে নদী। আতঙ্কিত বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন