বহরমপুরে অনশন চার বন্দির

বিভিন্ন দাবিতে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের চার জন বন্দি অনশন শুরু করে। ওই চার জন বন্দির মধ্যে দু’জন ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি বাবু মোল্লা ও বিনয় মাঝি এবং দুজন বিচারাধীন বন্দি তৌহিদ মোল্লা ও ইদ্রিশ আলি যৌথ ভাবে গত বুধবার থেকে অনশন শুরু করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৬
Share:

বিভিন্ন দাবিতে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের চার জন বন্দি অনশন শুরু করে। ওই চার জন বন্দির মধ্যে দু’জন ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি বাবু মোল্লা ও বিনয় মাঝি এবং দুজন বিচারাধীন বন্দি তৌহিদ মোল্লা ও ইদ্রিশ আলি যৌথ ভাবে গত বুধবার থেকে অনশন শুরু করেন।

Advertisement

বহরমপুর সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবু মোল্লার বাড়ি মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকায়। বছর ছয়েক আগে চোখ উপড়ে ১০ বছরের এক বালককে খুনের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলাও দায়ের হয়। পরে ২০১৩ সালে জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ফাঁসির সাজা শোনান। তার পর থেকেই বাবু মোল্লা সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে বহরমপুর জেলে রয়েছেন। অন্য দিকে বীরভূম জেলার বোলপুর থানা এলাকার বাসিন্দা বিনয় মাঝির বিরুদ্ধে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় বীরভূম জেলা জজ আদালতের বিচারক ফাঁসির সাজা দেন। ওই কয়েদিও ২০১৩ সাল থেকে বহরমপুর সংশোধনাগারে।

এর পাশাপাশি দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মাওবাদী নেতা তৌহিদ মোল্লা ও ইদ্রিশ আলি বিচারাধীন বন্দি হিসেবে ২০১০ সাল থেকে বহরমপুরে। কারা আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক বন্দি ও ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের প্রথম শ্রেণির বন্দি হিসেবে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।

Advertisement

সেই মতো তাদের সাবান, তেল, টুথপেস্ট, কফি-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী জেল কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ আচমকা ওই নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ।

এ প্রসঙ্গে তৌহিদ মোল্লার আইনজীবী অমিত বিশ্বাস বলেন, “জেল কর্তৃপক্ষ আচমকা ওই নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় সপ্তাহ খানেক আগে আমার মক্কেল সিজেএম আদালতের বিচারকের কাছে পাঠানোর জন্য লিখিত আবেদনপত্র ভারপ্রাপ্ত জেল সুপারের কাছে জমা দেয়।”

অমিতবাবু বলেন, “নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়মিত সরবারহ না করলে জেলের মধ্যে বিভিন্ন অসুবিধের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে ওই লিখিত আবেদনে উল্লেখ ছিল। সেই সঙ্গে ওই ওই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়মিত সরবরাহের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করারও উল্লেখ ছিল ওই আবেদনপত্রে। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ ওই আবেদনপত্র আদালতে জমা দেয়নি বলে আমার মক্কেল জানতে পারেন। তার পরেই প্রতিবাদে ওই চার জন যৌথ ভাবে অনশন শুরু করেন।”

কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ২৫ নম্বর ‘কনডেমনড সেল’-এ ২৫টি সেল রয়েছে, তার পাশাপাশি চারটি সেলে ওই চার জন রয়েছেন। ওই অনশন প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলের এক অফিসার বলেন, “আগামী দু’মাসের ব্যবহারের মত ওই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী এক সঙ্গে দিতে হবে বলে তারা দাবি তোলে। কিন্তু দু’মাসের এক সঙ্গে ওই সামগ্রী দেওয়ার নিয়ম নেই জানানো হলেও ওই চার জন তা মানতে রাজি হয়নি। তখন তারা অনশন শুরু করে।”

তবে নিয়মিত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরে বৃহস্পতিবার রাত থেকে তারা ওই অনশন তুলে নিয়েছে বলেও জানান বহরমপুর জেল কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন