দু’দফায় ভোটগ্রহণ হবে মুর্শিদাবাদ জেলায়। আসন্ন সেই লোকসভা নির্বাচনের বিধি-নিয়মাবলী রাজনৈতিক দলগুলিকে জানাতে বৃহস্পতিবার এক কর্মশালা করল মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন।
বহরমপুর সার্কিট হাউসে ওই কর্মশালায় হাজির ছিলেন সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, “আগামী ৯ মার্চ বিশেষ দিন হিসেবে ভোটার তালিকা নিয়ে প্রতিটি বুথে বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) থাকবেন। ওই দিন ভোটার তালিকায় নতুন নাম সংযোজন করা যাবে, তেমনই সংশোধন করাও যাবে। সংযোজন ও সংশোধিত নামের ভোটাররা আসন্ন লোকসভা নির্বোচনে ভোটাধিকারও প্রয়োগ করতে পারবেন।” সেই সঙ্গে নির্বাচনী কমিশনের ‘কোড অফ কন্ডাক্ট’ অনুযায়ী প্রার্থীদের নিজের নামে বা এজেন্টের নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ওই নম্বরের অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা করার পরে প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারে সেই টাকা খরচ করতে পারবেন। সিপিএমের শ্যাম দে বলেন, “নির্বাচনী কমিশনের বিধি-নিষেধ অনুযায়ী এ বারই প্রথম পোস্টার, হোর্ডিং, ফ্লেক্স-এ প্রকাশক ও যে প্রেস থেকে তা ছাপানো হবে, সেই প্রেসের নামের উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নগদে ২০ হাজার পর্যন্ত অর্থ খরচ করা যাবে। তার চেয়ে বেশি খরচ হলে চেকে পেমেন্ট করার কথা বলা হয়েছে।”
এ বার দু’দফায় মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটে লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ হবে। তার মধ্যে আগামী ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ হবে। দ্বিতীয় দফার ভোট হবে আগামী ১২ মে। ওই দিন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ হবে। মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভা দুটি মালদহ (দক্ষিণ) লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে রয়েছে। জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের সঙ্গে ওই একই দিনে মালদহ (দক্ষিণ) লোকসভা কেন্দ্রেরও ভোটগ্রহণ হবে। লোকসভা নির্বাচনে এক জন প্রার্থী ৭০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে পারবেন বলে কমিশন জানিয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত কোনও সরকারি কাজ করা যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কংগ্রেসের আনিসুজ্জামান বলেন, “মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন ৩০ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার৯ এপ্রিল। অন্য দিকে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন ধার্য হয়েছে ২০ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল। মনোনয়ন প্রত্যাহার হবে ২৯ এপ্রিল।” গাড়ির কনভয় নিয়ে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়েছে এদিনের কর্মশালায়। যা শুনে সভাতেই দীর্ঘশ্বাস ফেলেন কয়েকজন নেতা। তারই মধ্যে এক জন বলেন, “সবই এখন কেমন যন্ত্রের মতো। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে জওয়ান। লোকজন লাইন দিয়ে ভোট দেবে। নিয়মের কড়াকড়িতে ভোটের মেজাজটাই হারিয়ে গিয়েছে।”