সেই রোগী।—নিজস্ব চিত্র।
‘ভাষা’ সমস্যার কারণে এক রোগীকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত ১৬ অগস্ট থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পূর্বরেলের হাওড়া ডিভিশনের কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার ডাহাপাড়া হল্ট স্টেশনের কাছে লালকুঠি রেলগেটের রেল লাইনের ধারে জখম অবস্থায় পড়েছিলেন ওই যুবক। আজিমগঞ্জ রেল পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই যুবককে উদ্ধার করে স্থানীয় আজিমগঞ্জ এজি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তখন থেকেই ওই যুবক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ভাষা সমস্যার কারণে ওই রোগীর পরিচয় জানা সম্ভব হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই যুবক বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি কোনও ভাষা বোঝেন না। ওই যুবক আগের থেকে এখন অনেকটাই সুস্থ। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলে কী করব, সেই কথা ভেবেই আমরা চিন্তিত।”
ভাষা সমস্যার কারণে গত ১৬ অগস্ট ঠিক কী ঘটেছিল, তাও রেল পুলিশ জানতে পারেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সম্ভবত কোনও ভাবে ওই যুবক ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এমনও হতে পারে, কেউ ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু ভাষার কারণে পুলিশ প্রকৃত ঘটনা জানতে ব্যর্থ হয়েছে। জানা যায়নি ওই যুবকের নাম-ঠিকানাও। আজিমগঞ্জ জিআরপি-র ওসি তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই যুবকের বিষয়টি জানিয়ে সব থানায় মেসেজ দিয়েছি। কিন্তু ওই যুবকের সন্ধানে এখন পর্যন্ত কেউ আসেননি।”
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভর্তির সময়ে ওই যুবকের ডান পা ভাঙা ছিল। মুখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ছিল আঘাতের চিহ্ন। সুপার বলেন, “ওই রোগীর শরীরে যে সমস্ত আঘাত এখন ভাল হয়ে গিয়েছে। তবে ভাঙা পায়ে প্লাস্টার করা হয়েছে। ৪২ দিন পরে ওই প্লাস্টার খুলে দেওয়া হবে।” ভর্তির পর থেকে ওই রোগীর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহণ করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মণিময়বাবু বলেন, “ভর্তির সময়ে ওই যুবকের পরনে ছিল নোংরা ও ছেঁড়া পোশাক। তা দেখে নতুন পোশাকও কিনে দেওয়া হয়েছে। কোনও ভাবে ওই যুবকের নাম-ঠিকানা জানতে পারলেই আশা করি সমস্যা মিটে যাবে।”