ভর্তিতে টাকা না-দেওয়ায় মার

ফের টাকা নিয়ে কলেজে ভর্তি করার বিতর্কে জড়ালো তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) নেতার নাম। জেলা নদিয়া, যেখানে ভক্তবালা বিএড কলেজে একই ধরনের অভিযোগের সরকারি স্তরে তদন্ত চলছে। এ বারের ঘটনাস্থল শান্তিপুর কলেজ। অনার্স পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা চাওয়ায় অভিযুক্ত কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তথা টিএমসিপি নেতা মনোজ সরকার।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৪ ০২:১৫
Share:

নেপাল রাজবংশী ও মনোজ সরকার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

ফের টাকা নিয়ে কলেজে ভর্তি করার বিতর্কে জড়ালো তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) নেতার নাম। জেলা নদিয়া, যেখানে ভক্তবালা বিএড কলেজে একই ধরনের অভিযোগের সরকারি স্তরে তদন্ত চলছে।

Advertisement

এ বারের ঘটনাস্থল শান্তিপুর কলেজ। অনার্স পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা চাওয়ায় অভিযুক্ত কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তথা টিএমসিপি নেতা মনোজ সরকার। শান্তিপুরের ঘোড়ালিয়ার বাসিন্দা বাবলু রাজবংশীর অভিযোগ, তাঁর ছেলে নেপালকে ইতিহাসে অনার্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা চান মনোজ। নেপাল টাকা দিতে পারবেন না বলায়, তাঁকে অন্তত ৩০-৪০ জন লোক জোগাড় করে দিতে বলা হয়। তা-ও না পারায় মনোজের লোকেরা নেপালকে মারধর করেছে।

পাস কোর্সের মেধা তালিকায় নাম বেরিয়েছে কি না দেখতে বুধবার শান্তিপুর কলেজে যান নেপাল। তাঁর উপরে হামলা হয় কলেজেই। বুধবার গভীর রাতে মনোজ-সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাবলুবাবু। মনোজ অবশ্য ঘটনার সময় রানাঘাট আদালতে ছিলেন দাবি করে বলেন, ‘‘ওই ছাত্রকে চিনি না। মিথ্যা অভিযোগ করছেন ওঁরা। কখনও কারও কাছ থেকে ভর্তির নাম করে এক টাকাও নিইনি।” এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেছেন, ‘‘অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার শান্তিপুর কলেজে গিয়ে পড়ুয়াদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে অবশ্য মনে হয়েছে, নেপাল রাজবংশীর অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রের দাবি, ‘‘বাংলা অনার্স তালিকায় অনেক নীচে আমার নাম ছিল। তালিকা দেখতে এসে এক দাদার সঙ্গে পরিচয় হয়। সে কলেজের এক টিএমসিপি নেতার কাছে নিয়ে যায়। তাঁর কথামতো ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পরে অনার্সে ভর্তি হতে পারব বলে কথা দিয়েছেন ওঁরা।’’ আর এক ছাত্রী বলেন, ‘‘আমাকে ওরা বলেছিল, ১৫ হাজার টাকা দিলে ইতিহাসে অনার্স পাইয়ে দেবে। রাজি হইনি।”

বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানে গিয়ে তোলাবাজি, অস্বচ্ছতা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন দলের কর্মীদের। তার পরে দলেরই ছাত্র সংগঠনের নেতার বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ ওঠা কি অভিপ্রেত?

টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেছেন, “ওই ঘটনার ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি। অন্যায় হয়ে থাকলে, তা বরদাস্ত করা হবে না।”

শান্তিপুর কলেজের টিচার-ইনচার্জ চয়ন ভট্টাচার্যের দাবি, “ঘটনাটা লিখিত ভাবে আমাকে কেউ জানাননি। ফলে এই মুহূর্তে ব্যবস্থা নিতে পারছি না।”

বাবলুবাবুর দাবি, অভিযুক্তদের অনেককেই এখন তাঁদের বাড়ির আশপাশে মোটরবাইক নিয়ে চক্কর কাটতে দেখা যাচ্ছে। ফলে, বাড়ির লোকেরা মানসিক চাপে রয়েছেন। শক্তিনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নেপাল রাজবংশী বলেন, ‘‘এর পরে কোন সাহসে ওই কলেজে যাব? পড়াশোনাটাই না বন্ধ হয়ে যায়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন