হাতে মাত্র এক দিন। রবিবারের মধ্যে মুক্তিপণ বাবদ ২০ লক্ষ টাকা না দিতে পারলে তপনকুমার খাঁকে খুন করার হুমকি দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। অথচ সামর্থ্য নেই যে দাবি মিটিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে আনা যাবে। তাই দিনরাত এক করে ঈশ্বরকে ডাকা ছাড়া কোনও উপায় দেখছে না তপনবাবুর পরিবার।
মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে গত ২৫ অক্টোবর অসমের কোকড়াঝাড় জেলার আটিয়াবাড়ি শান্তিপুর এলাকা থেকে অপহৃত হন চাকদহের বাসিন্দা তপনবাবু। পুলিশের অনুমান, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অফ বরোল্যান্ডের জঙ্গিরা তাঁকে অপহরণ করেছে। প্রথমে মুক্তিপণ হিসেবে ৮০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তারা ২০ লক্ষ টাকা পযর্ন্ত নামে। কিন্তু তপনবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়জোর দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত তাঁরা দিতে পারবেন। তার উত্তরে দুষ্কৃতীরা হুমকি দেয় প্রত্যাশা মতো টাকা না পেলে তাঁকে খুন করা হবে। স্বভাবতই আশঙ্কায় নাওয়া খাওয়া ভুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রী পারুলদেবী বলেন, “আমি অসুস্থ। সুগার বেড়েছে। ক’দিন আগে চোখের অপারেশন হয়েছে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই।” প্রতিবেশী স্বপন সেন বলেন, “তিনি যে এভাবে অপহৃত হতে পারেন, ভাবতেও পারিনি। আমরা চাই ভালোয় ভালোয় তিনি বাড়িতে ফিরে আসুন। প্রয়োজনে অসমের সংবাদ মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে তাঁর প্রাণ ভিক্ষার আবেদন জানাব।”
মাস তিনেক আগে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত ধরে অসমে পাড়ি দিয়েছিলেন তপনবাবু। সংস্থার প্রোগ্রাম ডিরেক্টর বলেন, “ওই দিন স্থানীয় বছর ত্রিশের এক যুবক তপনবাবুকে এলাকা চেনাচ্ছিল। তাঁকেও অপহরণ করা হয়েছে।”বৃহস্পতিবার রাতে তপনবাবুর বাড়িতে যান কল্যাণীর এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায়। প্রায় আধ ঘণ্টা তপনবাবুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”