শোকার্ত পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।
ইটভাটার জন্য অবৈধ ভাবে মাটি কাটার ফলে তৈরি হয়েছিল জলাশয়। সেখানে স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল একই পরিবারের তিন শিশুর। সোমবার দুপুরে রঘুনাথগঞ্জ থানার কাটাখালি গ্রামের ঘটনা। মৃত তিন শিশুর দু’জন ভাই-বোন আসিফ ইকবাল (৫) ও আয়েষা খাতুন (৭)। অন্য জন তাদেরই ভাগ্নি (দিদির মেয়ে) নাসিফা খাতুন (৫)। নাসিফার বাড়ি লালগোলায়। দিন চারেক আগে কাটাখালিতে দিদিমার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল সে।
বাড়ির পিছনে প্রায় দেড়শো মিটার দূরে মাটি কাটার ফলে বড় একটি জলাশয় তৈরি হয়েছে। আসিফ, আয়েষা ও নাসিফা এদিন সেখানে স্নান করতে যায় বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ। বাড়ির লোকজন খেয়াল করেননি। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ খাবার সময় হলে তিন জনের খোঁজ শুরু হয়। বাড়ির পিছনে ওই জলাশয়ের পাড়ে গামছা পড়ে থাকতে দেখে নেমে তল্লাশি শুরু করেন বাড়ির লোকজন। ওই জলাশয় থেকেই একে একে মেলে তিন জনের মৃতদেহ।
আসিফ ও আয়েষার বাবা আসরাফুল শেখ জামশেদপুরের হকার। তাঁর ছয় ছেলে-মেয়ে। ক’দিন আগে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন আসরাফুল। তাঁর ভাই মেহেবুব আলম বলেন, “ইটভাটার জন্য মাটি বিক্রি করে ব্যবসা করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। পরে তাতে জল জমে পুকুরের মতো হয়ে যাচ্ছে। এই রকম অজস্র বেআইনি পুকুর তৈরি হয়েছে এই এলাকায়। আমরা বড়রা জানি বলে ওখানে যাই না। ছোটদের কে বোঝাবে। কিছু লোকের আহাম্মকির জন্য আমাদের পরিবারের তিন-তিনটি প্রাণ অকালে চলে গেল।”
রঘুনাথগঞ্জ ২-এর বিডিও বিরাজকৃষ্ণ পাল বলেন, “অবৈধ মাটি কাটা বন্ধ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। তবে, গ্রামের লোকজন সম্মিলিত ভাবে এর প্রতিবাদ না করলে রোখা কঠিন।”