মিঞাপুরে বিক্ষোভ সামলাতে
চালু রেল গেট বন্ধ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার বিকেলে উত্তেজনা ছড়াল রঘুনাথগঞ্জের মিঞাপুর বাজারে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ সামলাতে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানেরা লাঠি চালায়। পাল্টা উত্তেজিত ব্যবসায়ীরাও নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের লক্ষ্য করে ইট ও পাথর ছুড়তে শুরু করে। প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে চলা এই খণ্ডযুদ্ধে ৫ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রঘুনাথগঞ্জ থানা থেকে ছুটে আসে পুলিশ। এদিনই সন্ধে নাগাদ গেটের দু’দিকে গর্ত খুঁড়ে রাস্তার উপর লোহার পিলার বসিয়ে রেল গেটটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়।
মিঞাপুরের পাশেই জঙ্গিপুর রোড রেল স্টেশন। মিঞাপুরের উপর দিয়েই গিয়েছে রঘুনাথগঞ্জ থেকে উমরপুরে যাওয়ার প্রধান রাজ্য সড়ক। মিঞাপুরে এই সড়কের উপরেই এতদিন ছিল একটি রেল গেট। গত ২৭ নভেম্বর এখানে আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করা হয়েছে একটি উড়ালপুল।
এরপর রেল দফতর জানিয়ে দেয় যেহেতু উড়ালপুল চালু হয়ে গিয়েছে, তাই সেতুর নীচের রেলগেটটি স্থায়ী ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এতেই আপত্তি তোলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সেতুটি উদ্বোধনের দিন থেকেই ব্যবসায়ীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রেল গেট বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। স্থানীয় প্রশাসন ও রেল কর্তাদের কাছে ডেপুটেশনও দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জেলা চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের সহকারী সভাপতি শ্যামল সাহা বলেন, “দীর্ঘ লম্বা ও উঁচু ওই রেল সেতু দিয়ে চালের বস্তা বোঝাই সাইকেল, রিকশা ও ভ্যান যাতায়াত করা কষ্টকর। জেলার মধ্যে বড় চালের বাজার থেকে প্রতিদিন কয়েকশো এই ধরনের যানবাহন মিঞাপুরে আসে। গেট বন্ধ করে দিলে সমস্যায় পড়বে সকলে।
মঙ্গলবার মাইকে রেল কর্তৃপক্ষ প্রচার করে রেল গেট বন্ধের কথা জানান। বুধবার বিকেলে রেলের কর্তারা গেট বন্ধের জন্য ঠিকাদার নিয়ে আসেন। সঙ্গে ছিল রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানেরা। সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীরা রেলের অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। তখন উত্তেজিত হয়ে কেউ পাথর ছোড়ে। তাতেই আলোচনা ভেস্তে যায়। অভিযোগ, নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানেরা উপস্থিত ব্যবসায়ীদের উপর লাঠি চালাতে শুরু করে। আহত হন পাঁচ ব্যবসায়ী। এরপরই শুরু হয় তুমুল গোলমাল।
ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা আবার সেতু অবরোধ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ গিয়ে সেই অবরোধ তুলে দেয়।
লাঠিচার্জের কথা অস্বীকার করেছেন রেল কর্তারা। জঙ্গিপুরের স্টেশন ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার বলেন, “রাজ্য সরকারের সঙ্গে রেল মন্ত্রকের চুক্তি হয়েছিল, উড়ালপুলের নীচে সেতু তৈরির কাজ শেষ হলে আর রেল গেট থাকবে না। চুক্তি মোতাবেকই কাজ হচ্ছে। মিঞাপুর রেলগেট বন্ধ হলে চার জন কর্মীরও খরচ বাঁচবে রেলের।”