পূর্ত দফতর চিহ্নিত করেছে ‘দুর্বল সেতু’ বলে। আর সেই অবস্থাতেই দাঁড়িয়ে আছে হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহী সড়কের উপর বড়ঞা ব্লক এলাকার হিমঘর মোড়ের সেতুটি। প্রায় এক দশক হয়ে গেল কানা ময়ূরাক্ষীর উপর ওই সেতু গায়ে ঝুলে আছে দুর্বলতার বিজ্ঞপ্তি। কিন্তু ‘দুর্বল সেতু’কে সবল করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারটুকু করার কোনও উদ্যোগ নেই পূর্ত দফতরের। তারা দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতেই বেশি উৎসাহী।
এ দিকে প্রতিদিনই বাড়ছে যান চলাচল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে হাতে গোনা কয়েকটি গাড়ি চলত। কিন্তু এখন রাস্তায় ক্রমশই বাড়ছে যানবাহন। বহরমপুর শহরের উপর দিয়েই সাধারণত উত্তরবঙ্গে যাতায়ত করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে বিকল্প হিসাবে হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহী সড়কও ব্যবহার করেন অনেকে। মালদহ, বালুরঘাট, উত্তর দিনাজপুর-সহ লালগোলা, ভগবানগোলা, রঘুনাথগঞ্জ ফারাক্কা থেকে বহু যাত্রীবাহী বাস বর্ধমান, কাটোয়া, দুর্গাপুর, বীরভূমের বোলপুর, ও রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় বহু বাস যাতায়ত করে। তাছাড়াও এলাকায় ময়ূরাক্ষী নদী থাকার সুবাদে ওই নদী থেকে বালি বোঝাই করা ট্রাক ও বীরভূমের পাহাড় থেকে পাথর বোঝাই ট্রাক ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। ফলে হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহী সড়কের উন্নতি হয়েছে। দু’লেনে গাড়ি চলে। কিন্তু সেতুটি রয়ে গিয়েছে এক লেনেরই।
এক প্রান্ত থেকে সেতুতে গাড়ি উঠলে অন্য প্রান্তে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। এতে হামেশাই যানজট হয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্যদিকে লোহার রেলিং ভেঙে গিয়ে যথেষ্ট বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যে কোনও সময় যে কোনও দুর্ঘটনার মুখে পড়তে পারে ভারী গাড়িগুলি।
কান্দি মহকুমা ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ফুলু মিঞা বলেন, “আমরা বহু বছর ধরে ওই সেতুটি নতুন করে সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু পূর্ত দফতরের কর্তারা নজর না চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়ত করেছেন।”
ওই সেতুটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতরের বহরমপুর ১নং বিভাগ। বিভাগীয় আধিকারিক আজফার আলি অবশ্য কাজের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চান। তিনি বলেন, “রাস্তাটি পূর্ত দফতরের হাইওয়ে বিভাগের। শুধুমাত্র ওই সেতুটি আমাদের অধীনে। এভাবে ভাগাভাগির ফলে রক্ষণাবেক্ষণের অসুবিধা হচ্ছে। দ্রুত সংস্কার জরুরি। আমরা ওই সেতুটি হাইওয়ে বিভাগের হাতে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। হস্তান্তর হয়ে গেলেই কাজ শুরু হবে বলেই মনে হচ্ছে।”